চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ-নির্বাচনে একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া। বাকি চার রাজনৈতিক দল মনোনীত প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার চেয়ে তিনি কিছুটা ব্যতিক্রমী প্রচারণায় নেমেছেন। নিজের পেশাগত জীবনের সাথীরা পরোক্ষভাবে তার নির্বাচনে সহযোগিতা করছেন। পাশাপাশি দেশের নামকরা রাজনীতিবিদদের সাথে তার ও তার পরিবারের আত্মীয়তার বিষয়টিও ভোটের মাঠে তুলে ধরে জয় ছিনিয়ে আনতে চান এই প্রার্থী।
‘রকেট’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মনজুরুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, প্রয়াত এমপি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ সম্পর্কে তার মামা হন। ফেনী-১ আসনের এমপি শিরিন আক্তার তার মামাতো বোন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের খালাতো ভাই ফেনীর ফুলগাজী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মরহুম অধ্যক্ষ বাহাউদ্দীন মানাকেবও সম্পর্কে তার মামা হন। এর বাইরেও চট্টগ্রাম ও জাতীয় রাজনীতির নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে তার আরো আত্মীয়-স্বজন আছে বলে জানান।
এসব আত্মীয় ভোটের মাঠে কি প্রভাব রাখবে? এমন এক প্রশ্নের জবাবে এই প্রার্থী বলেন, ‘আমরা ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। ৪০ বছর ধরে এই এলাকার মানুষের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এখানে আমার ভোট ব্যাংক আছে। আমার পেশাগত সহকর্মীদের অনেকেই এই এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া আত্মীয় স্বজনের বদৌলতেও অনেকে আমাকে ভোট দেবেন। ভোটাররা ভোট দিতে পারলে আমি জিতবো।’
২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়ে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এই প্রার্থী পেশাগত জীবনে ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট অব বাংলাদেশ এবং ইন্সটিটিউট অব কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টস অব বাংলাদেশ’র সদস্য। তিনি জানান, এই দুই প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৩০ হাজারের বেশি সক্রিয় সদস্য আছে। যাদের অনেকে বিভিন্ন বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। তারা প্রত্যক্ষভাবে না থাকলেও পরোক্ষভাবে তার নির্বাচনে বিভিন্নভাবে সহায়তা করছেন বলে জানান এই প্রার্থী।
আলাপকালে মনজুরুল জানান, তার দাদা মরহুম আবদুল হক ব্রিটিশ গ্র্যাজুয়েট ছিলেন। নানা মরহুম আবদুল মতিন পাকিস্তান আমলে ফুড ইন্সপেক্টর ছিলেন। বাবা আবুল কাসেম ভূঁইয়া ছিলেন আইনজীবী। মা শাহান আরা খানম দীর্ঘ ৪০ বছর শিক্ষকতা পেশায় ছিলেন। তিনি গুলজার বেগম সিটি করপোরেশন গার্লস হাইস্কুল, পোস্তার পাড় গার্লস হাই স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মানুষ এসবের মূল্যায়ন করবে বলে তার বিশ্বাস। তিনি ভোটকেন্দ্রের সিসি ক্যামরাগুলো নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক ট্র্যাক করার দাবি জানান।
গত ২ জুন এই আসনের এমপি ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুর পর শূন্য হওয়া আসনটিতে আগামী ৩০ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রত্যেক কেন্দ্রে সিসিটিভি বসিয়ে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচনে মনজুরুল ছাড়াও আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু ‘নৌকা’, জাতীয় পার্টির মো. সামসুল আলম ‘লাঙ্গল’, তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত ‘সোনালী আঁশ’ ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী রশিদ মিয়া ‘ছড়ি’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই