চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্বগ্রহণের প্রায় দেড় বছর পর প্রথমবারের মত গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন। সভায় তিনি চসিকে দায়িত্ব পালনকালে সমস্যা, সংকট, প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে স্বচ্চতা, সততা ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপালনে নিজের প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করেন। প্রতিশ্রুতি দেন সুন্দর নগর গড়ার।
বুধবার দুপুরে নগরের জামালখানের সিনিয়র ক্লাবের হলে জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকার ব্যুরো প্রধানদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, বিত্তশালীদের ট্যাক্সের আওতায় আসতে হবে। কার্যত তিনটি নাগরিক সেবা পেতে নগরবাসী ট্যাক্স দিয়ে থাকেন। তাই সঠিক অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে মানুষ যাতে ট্যাক্স দিতে পারেন সে ব্যবস্থাই করা হচ্ছে। তবে যারা দরিদ্র ও ট্যাক্স দিতে অপরাগ তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে। কিন্তু যারা বিত্তশালী ট্যাক্স দেওয়ার সামর্থ্য আছে তাদের ট্যাক্সের আওতায় আসতে হবে।
চসিক তিনটি মৌলিক নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এর হলো- পরিকল্পিত, যুগোপযোগী ও মানসম্মত সড়ক নির্মাণ, নগরীকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং আলোকায়কন করা। তবে এর বাইরেও চসিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে নগরবাসী যেন এ তিন সেবা ঠিকমতো পান সে ব্যবস্থা করা হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৩ বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী ৩ অর্থবছরে নগরের দৃশ্যমান পরিবর্তন করা হবে। ১৯৯৫ সনের ড্রেনেজ মাস্টার প্লানের ভিত্তিতে নতুন দুটি খাল খননের জন্য ডিপিপি তৈরি করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পাওয়ার চায়নার মাধ্যমে নগরীর মদুনাঘাট থেকে পতেঙ্গা নেভাল বিচ পর্যন্ত ১৩০ ফুট রাস্তা, বণ্যা নিয়ন্ত্রণ দেয়াল নির্মাণ, ২৬টি খাল সংস্কার, খালের মুখে স্লুইস গেটসহ পাম্প হাউজ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে খাল নগরের খাল ও কর্ণফূলী নদী ড্রেজিং শুরু হবে।
নগর পিতা বলেন, চসিকের নিজস্ব কোনো অর্গানোগ্রাম নেই। তবে তা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। অর্গানোগ্রাম না থাকার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়াও বন্ধ। সংকট আছে দক্ষ জনবলের। ১৯৮৮ সালে চসিকের অর্গানোগ্রাম নিয়ে একটি গেজেট পাস হয়। কিন্তু নিয়োগবিধি চূড়ান্ত না হওয়ায় ২৮ বছরের মধ্যেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। যে কারণে আমার আগে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন চসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মোট বেতন ছিল ৯ কোটি। এখন তা হয়েছে ১৮ কোটি। শিক্ষা খাতে চসিককে ভর্তুকি দিতে হয় ৪২ কোটি টাকা। স্বাস্থ্য খাতে দিতে হয় ১৩ কোটি টাকা। এ ঘাটতি পূরণে ট্যাক্স আদায়ের বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে অনেকে পানি ঘোলা করতে চায়। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সম্পূর্ণ সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে আমি কাজ করতে চাই।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ নভেম্বর, ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন