চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে আবেদন করেছেন ১৪ জন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী। এ মনোনয়ন পেতে শীর্ষ প্রার্থীদের তদবিরের পাশাপাশি উদ্বেগে চট্টগ্রামের এসব প্রার্থীরা। নির্দলীয় নির্বাচন হলেও দলীয় সর্মথন পেতে শীর্ষ নেতাদের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দলীয় কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে থেমে নেই নিজেদের পদচারণা। এসব তদবিরে রয়েছে গত ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠা এমন নেতারাও। তবে আবেদনকারীদের মধ্যে অনেকেই প্রকৃত প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে কথা বলার জন্য এসব আবেদন জমা দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন প্রার্থী তাদের বায়োডাটা আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দপ্তর সম্পাদকের কাছে জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছেন বর্তমান জেলা পরিষদ প্রশাসক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সহ-সভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী ও লায়ন মো. শামসুল হক, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. সিরাজউদ্দৌলা চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, ওলামা লীগের নেতা আব্দুল খালেক, চন্দনাইশ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা আবু হেনা ফারুকী এবং মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী প্রমুখ।
জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠন করা হবে। চেয়ারম্যান ও এই ২০ জন সদস্যকে নির্বাচন করবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিটি কর্পোরেশন (যদি থাকে), পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। তিন পার্বত্য জেলা বাদে আগামী ২৮ ডিসেম্বর ৬১টি জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। পাঁচ বছরে এম এ সালামের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহারের কোন অভিযোগ উঠেনি। উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার এবং প্রকল্প বরাদ্দে স্বজনপ্রীতির অভিযোগও কেউ তুলতে পারেনি। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা জানান, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে ছোট ছোট উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, শিক্ষাবৃত্তি, কর্মমুখী প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদকে একটি গণমুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়তে সক্ষম হয়েছেন। এবারও মনোনয়ন পেতে চেষ্টা করছেন তিনিও। এছাড়া অন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কাছ থেকে বাণিজ্যসহ অনেকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে। তারাও দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে থেমে নেই। চলছে লবিং তদবিরও। জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর বুধবার। মনোয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ৫ ও ৬ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১ ডিসেম্বর ও প্রতীক বরাদ্দ ১২ ডিসেম্বর। আর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ডিসেম্বর।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ-১৬