বৈরী আবহাওয়ায় কারণে খুলনায় সোমবার সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। তবে তা’ উপেক্ষা করেই প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন মেয়র প্রার্থীরা। বৃষ্টি থেমে যেতেই মাইকিং, পোস্টার আর লিফলেট বিতরণে আবারো সরগরম হয়ে ওঠে নির্বাচনী এলাকা। ভোটারদের বাড়িতে, অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, পাড়া-মহল্লায় ছিল কর্মী-সমর্থকদের পদচারণা। সেই সাথে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
সকালে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক নগরীর দৌলতপুর ৩নং ওয়ার্ডে মহসিন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি দৌলতপুুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। পরে সামাজিক সংগঠন বৃহত্তর মহেশ্বরপাশা জেনারেশন-২ এ মতবিনিময় ও মহসিন মোড়, সাতক্ষীরা রোডে গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ করেন।
পথসভায় তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতা, মশার উৎপাত, যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা, দুর্গন্ধ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশা। বিএনপি’র শাসনামলে সিটি কর্পোরেশন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। তিনি উন্নয়নের স্বার্থে দলমতের উর্ধ্বে এসে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। বেলা ১১টার দিকে বৃষ্টির মধ্যেই তিনি বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি আয়োজিত জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিকালে আবারো তিনি দেওলতপুর এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তৃতা করেন। এসময় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)’র খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম খোকন, নগর আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম বন্দ, বিজেএ’র চেয়ারম্যান ও দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী, বিজেএ’র সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুল হক, ব্যবসায়ী আলহাজ্ব শেখ মজনু, শাহীন জামাল পন, খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবিদ হোসেন, কেসিসির সাবেক প্যানেল মেয়র মনিরুজ্জামান খান খোকন উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু আজ সকালে নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল, কাঁচা বাজার ও সংলগ্ন আবাসিক এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি এসময় সরকার পাটকল শ্রমিকদের সাথে প্রহসন করছে দাবি করে অবিলম্বে তাদেরকে মজুরি ও ভাতা প্রদানের দাবি জানান।
তিনি বলেন, ক্ষুধার জালায় অসহায় পরিবার-পরিজনের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে শ্রমিকরা এখন রাজপথের আন্দোলনে। আসন্ন নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি খালিশপুর শিল্পাঞ্চল পুনরুজ্জীবনে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস পূর্নব্যক্ত করেন।
দুপুরে বৃষ্টির মধ্যেই তিনি ১৮নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তৃতা করেন। পরে বিকালে তিনি রূপসা স্ট্যান্ড রোড থেকে শুরু করে ৩০ ও ৩১নং ওয়ার্ডের বিভিন্নস্থানে ভোটারদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। এসময়র তার সাথে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা শাহজালাল বাবলু, ফখরুল আলম, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন সেন্টু, বিএনপি নেতা শেখ আব্দুর রশিদ, আবু হোসেন বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মুজিবর রহমান, একরামুল হক হেলাল, এসএম কামাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম বাবু, কাউন্সিলর প্রার্থী হাফিজুর রহমান মনি, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের প্রার্থী হাসনা হেনা, ইখতিযার হোসেন লাভলু, রিয়াজুর রহমান, আব্দুল আলিম, আনিসুর রহমান আরজু, নাহিদ আল মামুন, ইব্রাহিম হোসেন, আবুল হোসেন, জাকির মুন্সি, সিদ্দিকুর রহমান, নজরুল ইসলাম, সোহেল, শেখ হাসমত প্রমুখ।
পাশাপাশি সিটি নির্বাচনে খুলনাবাসীকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনকে তরান্বিত করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি এদিন সকালে রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি রূপসা ফেরীঘাট, টুটপাড়া, রূপসা স্ট্যান্ড রোড ও চানমারিতে গণসংযোগ করেন এবং জনগণের কাছে ধানের শীষে ভোট চান।
এসময় তার সাথে বাগেরহাট জেলা বিএনপি সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলী রেজা বাবু, পিরোজপুর জেলা বিএনপি সভাপতি আলমগীর হোসেন, সদর থানা বিএনপি সভাপতি জলিল খান কালাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শফিকুল আলম তুহিন, আশরাফুল আলম নান্নু উপস্থিত ছিলেন।
বিডিপ্রতিদিন/ ই-জাহান