সাভারে চুরির অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয়ে (২৮) এক যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ৩৫/৪০ জনকে অজ্ঞাত করে মঙ্গলবার রাতে সাভার মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে, ওইদিন সকালে সাভার পৌর এলাকার তালবাগে বায়তুন নাজাত তালবাগ কবরস্থান জামে মসজিদের দানবাক্স ভেঙে টাকা ও মাইক চুরির অভিযোগে ওই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ নিহত যুবকের পরিচয় জানাতে পারেনি।
পুলিশ ও এলাকাবাসী বলেন, মঙ্গলবার ভোরে ফজরের নামাজ শেষে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক যুবক মসজিদের দানবাক্স ভেঙে নগদ টাকা ও মাইক চুরির করার চেষ্টা করে। এসময় মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ মোমিন বিষয়টি টের পেয়ে পার্শ্ববর্তী নুরুজ্জামানসহ কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে আসেন। পরে তারা ওই যুবককে আটক করে মসজিদের মাইকে চোর আটকের বিষয় ঘোষণা দিলে মুহুর্তের মধ্যেই এলাকাবাসী জড়ো হয়ে যায়। এসময় স্থানীয়রা ওই যুবককে গাছের সাথে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন শুরু করে।
এর এক পর্যায়ে যুবকের হাত বাশের সাথে বেঁধে পুরো এলাকায় ঘুরানো হয়। এলাকা ঘুরানো শেষে আবারো মসজিদের সামনে নিয়ে এসে একটি গাছের সাথে কাপড় দিয়ে বেঁধে রেখে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। টানা চার ঘণ্টা তাকে মারধরের এক পর্যায়ে ওই যুবক অচেতন হয়ে পড়ে। এসময় একটি রিকশাযোগে তাকে সাভার থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এসময় রিকশাওয়ালা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের একটি সড়কে ফেলে রেখে চলে যায়।
খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ৯নং ওয়ার্ডে পৌর কমিশনার আয়নাল হক গেদু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মসজিদের মাইক ও দানবাক্স ভেঙে টাকা চুরির করার সময় ইমাম দেখতে পায়। পরে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে যাওয়ার পর তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
এব্যাপারে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন এ ঘটনায় ৩৫/৪০ জন এলাকাবাসীকে অজ্ঞাত করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম