শিরোনাম
১৫ জুলাই, ২০২০ ০৫:৪১

'করোনারে ডরাই না, খিদেরে ডরাই'

অনলাইন ডেস্ক

'করোনারে ডরাই না, খিদেরে ডরাই'

রিলিফ কার্ড হাতে স্ত্রী-সন্তানসহ আলমগীর হোসেন।

স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বস্তিতে থাকেন আলমগীর হোসেন (৩২)। আজন্ম দৃষ্টিহীন আলমগীর পেশায় একজন ভিক্ষুক। ঢাকার অলি-গলি-রাজপথে ভিক্ষা করেই কোনওমতে চলে যাচ্ছিলো তিন জনের সংসার। 

কিন্তু হঠাৎ করোনা মহামারীর প্রকোপে অন্ধকার নেমে আসে আলমগীরের জীবনে। করোনা প্রতিরোধে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এতে বন্ধ হয়ে যায় ভিক্ষাবৃত্তি, বউ-বাচ্চা নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতে থাকে আলমগীরের।

তিনি জানান, আমরা না খাইয়া থাহি, তাতে কষ্ট নাই। কষ্ট পোলাডারে লইয়া। এতোটুকুন বাচ্চা খিদের জ্বালা সহ্য করবো কেমনে? করোনারে ডরাই নারে ভাই, ডরাই খিদেরে।

শুধু আলমগীর হোসেন নন, তার মতো হাজারো মানুষের অবস্থা এখন একই রকম। করোনা মহামারীর ভয়াল থাবায় রুটি-রুজি হারানো এসব মানুষের আরও একজন রুহুল আমিন (৩৫)। 

রুহুল আমিনের বসবাস কুমিল্লা সদর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গুনানন্দী গ্রামে। ভ্যান চালানোর সামান্য উপার্জন দিয়েই চলে স্ত্রী-সন্তানসহ তার চার সদস্যের সংসার। কিন্তু করোনা মহামারী শুরু হবার পর ভাটা পড়েছে উপার্জনে। ফলে দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

তিনি বলেন, দেশের এই অবস্থায় কেমনে বাঁইচা থাইক্কাম? পোলা-মাইয়াডিরে কি খাওয়াইয়া বাঁচাই রাইখাম? এই টেনশনেই হার্টফেল করতাম। কিন্তু বিপদের এই দিনে কেয়ার আর কোকা-কোলা আমরার পাশে আইয়া বাঁচাইছে।

একই অনুভূতি জানালেন গাজীপুরের কল্পনা আক্তার (৩৭)। তিনি বলেন কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন পাশে না খাঁড়াইল পোলাপান লইয়া আমাগো হয়তো সত্যি সত্যিই না খাইয়া মরতে হইতো। তাগো দেওয়া চাল, ডাল, তেল, লবণ খাইয়াই এখন বাঁইচা আছি। এছাড়া হেগো দেয়া মাস্ক পইরা আমার স্বামী এহন কামেকাজে যাইতে পারতাছে। 

একই এলাকার আরেকজন সুবিধাভোগী অলি মিয়া (৭৮) বলেন, এই বিপদের দিনে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ যে খাবার কোকা-কোলা আমাগো দিছে, তা দিয়ে একদেড় মাস চলতে পারুম। 

করোনা মহামারীর প্রভাব মোকাবেলায় দি কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সম্প্রতি বাংলাদেশে 'কোভিড-১৯ রেসপন্স প্রোজেক্ট ২০২০' চালু করা হয়। কেয়ার বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা আহসানিয়া মিশন। 

প্রকল্পটির আওতায় ঢাকা, গাজীপুর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ এক মাসেরও বেশি দিনের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি মাস্ক, সাবান, ডিটারজেন্ট, স্যানিটারি ন্যাপকিন সহ অন্যান্য জরুরী স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রীও বিতরণ করা হয়েছে।     

 

বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ তাফসীর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর