বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় সুগন্ধা নদীর ভাঙনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে বাহেরচর এলাকায় অবস্থিত বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেকোনো যানবাহনে রোগী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় মানুষ নদীগর্ভে বিলীন সড়কের পাশের নালাজমি দিয়ে কোনো মতে পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই সড়কে চলাচলকারীরা।
এদিকে, বরিশাল সফররত পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি দ্রুত ওই এলাকায় নদী ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহজাহান হাওলাদার জানান, বাবুগঞ্জের রাকুদিয়া-আবুল কালাম ডিগ্রি কলেজ-বাহেরচর-চরসাধুকাঠী মাদ্রাসা-লাশঘাটা পর্যন্ত পাকা সড়কটি ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ওই সড়কের রক্ষাণাবেক্ষণ করে। এর আগেও ওই সড়কের ক্ষুদ্রকাঠী অংশ নদী ভাঙনে কবলিত হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করে।
সব শেষ গত শুক্রবার বিকেলে এবং পরদিন শনিবার সকালে দুই দফায় ওই সড়কের অন্তত ৫০০ ফুট জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সড়কের আংশিক নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় যেকোনো যানবাহনে বাবুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কেঁদারপুর ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
ওই সড়কের পথচারী আবুল হোসেন জানান, সড়কের একাংশ নদী গর্ভে চলে যাওয়ার পর ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত বন্ধ। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পাশের নালাজমি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। কিন্তু কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। তারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের অবাধ যাতায়াতসহ ওই সড়কের সকল যাত্রীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
স্থানীয় দেহেরগতি ইউপি চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান বলেন, এর আগে সুগন্ধা নদীর ক্ষুদ্রকাঠী এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তিনি সুগন্ধা নদীর ভাঙনের কবল থেকে ওই এলাকা রক্ষায় স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের দাবি জানান।
বরিশাল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সুগন্ধা নদীর ক্ষুদ্রকাঠী অংশে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিলে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পুনর্নিমাণের উদ্যোগ নেবে এলজিইডি। একই সাথে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ওইসব এলাকায় চলাচলের জন্য একটি বিকল্প সড়কও উন্নয়ন করার কথা বলেন তিনি।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, এখন নদী ভাঙন তীব্র হয়েছে। এ কারণে সড়কের একটি অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। বিষয়টি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জিওব্যাগ ফেলে সুগন্ধা নদীর ওই অংশে ভাঙন প্রতিরোধের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামীকাল সোমবার সেখানে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু হবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই কাজ শেষ হবে বলে আশা করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই