২৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৩:১০

নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ, পণ্য পরিবহনও বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগ, পণ্য পরিবহনও বন্ধ

ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা মজুরি প্রদান সহ ১০ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদ। 

গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতিতে স্থানীয় ও দূরপাল্লার রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে পণ্য পরিবহন। 

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। তবে এই মুহূর্তে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নৌযান মালিক সমিতির নেতারা।

রবিবার সকালে বরিশাল নদী বন্দরে গিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীদের দেখা গেছে। নৌযান বন্ধ থাকায় গন্তব্যে যেতে না পেরে ফিরে গেছেন অনেকে। অনেকে আবার বিকল্প ব্যবস্থায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে গন্তব্যে গেছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তারা নৌযান ধর্মঘট বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ভোলা যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ঘাটে আসা যাত্রী মো. আতিকুল্লাহ জানান, অফিসিয়াল কাজে ভোলায় যেতে হবে। এখন লঞ্চ না চলায় দুর্ভোগে পড়ে গেলাম। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিকল্প পথে যেতে হবে।

মেহেন্দিগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে নদীবন্দরে আসা যাত্রী শহিদুল ইসলাম জনান, জানা ছিল না যে আজকে ধর্মঘট। এটা দুঃখজনক আজকে লঞ্চ, কালকে বাস ধর্মঘট এইরকম চলতে থাকলে তো জনগণের দুর্ভোগের শেষ নাই। এরকম অনাকাঙ্খিত ধর্মঘট বন্ধ করার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বারবার বেতন বাড়ানোর আশ্বাস দেয়া হলেও নৌযান শ্রমিকদের বেতন বাড়েনি বলে অভিযোগ শ্রমিক নেতাদের। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন তারা।

বরিশাল বিভাগীয় নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম জানান, নৌযান শ্রমিকদের এই দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই। তিনি নৌযান শ্রমিকদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন। শ্রমিকদের ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা মজুরি প্রদান সহ ১০ দফা বাস্তাবায়ন করার কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশনের বরিশাল বিভাগের সভাপতি শেখ আবুল হাশেম জানান, যৌক্তিক দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। চুক্তি করেও তা বাস্তবায়ন করেনি সরকার এবং মালিক পক্ষ। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।

এদিকে, শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়ে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে দুই বছর আগে চুক্তি হয়েছিল যে আগামী পাঁচ বছরে তারা কোন আন্দোলন-সংগ্রাম করবে না। কিন্তু দুই বছর না যেতেই আন্দোলন শুরু করেছে তারা। বর্তমানে জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লঞ্চ পরিচালনায় লোকসান হচ্ছে বলে দাবি তাদের। এই মুহূর্তে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া সম্ভব নয় বলে জানিছেন তিনি। 

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলা থেকে রাজধানীতে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম নৌ পথ। এছাড়া বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ ১২টি রুটে চলাচল করে যাত্রীবাহী নৌযান। শ্রমিক ধর্মঘটে বন্ধ রয়েছে পণ্যবাহী নৌযান চলাচলও।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর