বুধবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিট দখলের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক

ফরহাদ উদ্দীন

সিট দখলের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের সিট দখল, প্রাধ্যক্ষের কার্যালয় ভাঙচুর এবং সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ১৬ জনের প্রত্যক্ষ অংশ নেওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে হল দখলের চেষ্টা হয়েছিল বলেও প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে কমিটি চারটি সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। এতে উল্লেখ করা হয়, এক সপ্তাহ ধরে পরিকল্পনা ও দফায় দফায় বৈঠক করে হল দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ছাত্রলীগ। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩ মার্চ রাতে হলের কক্ষ দখল, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটানো হয়।  ঘটনার পর হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খানকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রবিবার উপাচার্যের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফকির রাসেল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক নয়ন হাওলাদারের নির্দেশে প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর করে ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র মোবাশ্বির হোসাইন খান ও দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মো. জর্জ। এরা দুজনই হলের অনাবাসিক ছাত্র। ভাঙচুরের ঘটনায় উসকানি দেওয়া ও তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের রাইব আহমেদ রিজয়, ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের মুহাম্মদ আবু ইউনুস, পালি ও বুড্ডিস্ট স্টাডিজ বিভাগের মো. আবু বকর সিদ্দিক, ট্যুরিজম বিভাগের রায়হান ইসলাম ইমন ও ভাষাবিজ্ঞানের কাজী তানভীর আহম্মেদ। সংবাদ সংস্থা ইউএনবির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইমরান হোসেনের ওপর হামলার ঘটনায় অংশ নেয় সাতজন। তারা হলেন—ইসলামের ইতিহাসের শিপন মিয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার দেওয়ান সাবাব, ইসলামিক শিক্ষার মোশারফ হোসেন, উর্দু বিভাগের সাইদুর রহমান, দর্শন বিভাগের জিহাদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইমরান ও সমাজবিজ্ঞানের শামীম। তদন্ত কমিটি হলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ও বিভিন্ন সংবাদপত্রে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যেসব ছাত্রের নাম এসেছে তাদের বক্তব্য নিয়ে ও পরে অন্য ছাত্রদের বক্তব্য নিয়ে তদন্ত করে। কমিটি এ সময় ২২ জনের সাক্ষাৎকার নেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, ওইদিন রাতে হলের আসন দখলের উদ্দেশে বিজয় একাত্তর হলে ২০-২৫ জনের একটি দল বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাদের লক্ষ্য ছিল হলটির কর্তৃত্ব সম্পূর্ণ নিজের হাতে নিয়ে হলের নিয়ন্ত্রণ করা। একই সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও পূর্ণভাবে একাডেমিক কার্যক্রম চলতে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি করা। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর