শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প নিয়ে অতীতে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল, এখনো আছে। এ খাতে আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতিযোগীরা তৎপর রয়েছে। তবে কোনো অপতৎপরতা বাঙালি জাতিকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি এবং পোশাকশিল্প খাতের অগ্রগতিও দাবিয়ে রাখতে পারবে না। এ শিল্পের ধারাবাহিক উন্নতির জন্য সরকার কাজ করছে। পোশাকশিল্পের কর্ম-পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, শিল্প-কারখানা পরিদর্শন ও মনিটরিং জোরদারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।গতকাল রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা—আইসিসিবি-তে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান সেমস গ্লোবাল আয়োজিত টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্পের চার দিনব্যাপী ত্রি-মাত্রিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ত্রি-মাত্রিক প্রদর্শনীগুলো হলো— ‘১৮তম টেক্সটেক বাংলাদেশ-২০১৭, ১২তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক শো-২০১৭ এবং ২৮তম ডাই-ক্যাম বাংলাদেশ এক্সপো-২০১৭’।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন—এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি— বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি—বিকেএমইএ সহসভাপতি মনসুর আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্য দেন সেমস গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট মেহেরুন এন ইসলাম।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বহির্বিশ্বে স্বার্থান্বেষী মহলের নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও পোশাকশিল্প ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখেছে। ২০২১ সালে এ খাতের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জনে সক্ষম হবে। পোশাক খাতে জ্ঞানভিত্তিক ও হাইটেক শিল্প কারখানা গড়ে তোলার কাজ চলছে। এরসঙ্গে পোশাকের মূল্য সংযোজন, প্রয়োজনীয়, কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, পোশাকশিল্প সংকটময় সময় অতিক্রম করছে। রানাপ্লাজা ও তাজরিনের ঘটনা আমাদেরে পেছনে নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে গেছে। বিশ্বে আমাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চলছে। কিছু এনজিও ও শ্রমিক নেতা এবং এক শ্রেণির নব্য রাজাকারের জন্ম হয়েছে। তাদের কোনো চাপানো সিদ্ধান্ত দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
প্রদর্শনীর আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রায় ১ হাজার ১৫০টি প্রতিষ্ঠান ১ হাজার ৪০০টি স্টল নিয়ে এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। এতে টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্পের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি, সুতা ও কাপড় উৎপাদক মেশিনারিজ, ডায়েস এবং বিশেষ রাসায়নিক দ্রব্যের বিশাল সমাহার রয়েছে। এই প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ১২ আগস্ট প্রদর্শনীর সমাপনী।