বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

থামছে না পদ্মার ভাঙন

মধুমতি নদী গর্ভে বিলীন পিরোজপুর মহাসড়ক

প্রতিদিন ডেস্ক

থামছে না পদ্মার ভাঙন

একের পর এক পদ্মায় মিলিয়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, বাড়ি-ঘর। শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে তোলা ছবি

শরীয়তপুরে নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙন এখনো অব্যাহত রয়েছে। পদ্মার স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন করতে নদী খননের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনে মধুমতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ঢাকা-পিরোজপুর মহাসড়ক। এতে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। আর পানি উঠে পড়ায় গাইবান্ধায় ৪০ বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন— শরীয়তপুর : নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের তীব্রতা আগের চেয়ে কিছুটা কমলেও এখনো থেমে থেমে ভাঙছে পদ্মার পাড়। পদ্মার পানিতে বড় বড় ঘূর্ণিপাকের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়দের ধারণা আবারও যে কোনো সময় আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে পদ্মা। ভাঙন আতঙ্কে পদ্মা পাড়ের মানুষ গাছপালা কেটে ও স্থাপনা অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে তাত্ক্ষণিকভাবে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম শেখ জানিয়েছেন, পদ্মা নদীর নড়িয়া পয়েন্টে জরুরিভাবে পদ্মার চর কেটে স্রোতের গতিপথ অন্য দিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। দুটি ড্রেজার দিয়ে খনন কাজ শুরু করার কথা রয়েছে। একটি সোমবার সন্ধ্যায় পদ্মার নড়িয়া পয়েন্টে এসে পৌঁছেছে। অন্যটি ঢাকার দোহার থেকে রওনা দিয়েছে। গতকাল সকাল থেকেই চর কাটার কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্যদিকে ভাঙন কবলিত অসহায়দের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। দুপুরে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম। পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নড়িয়া উপজেলা চত্বরে ভাঙন কবলিতদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেছেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। না খেয়ে কাউকে থাকতে হবে না। তিনি বলেন, ভাঙন কবলিতদের জন্য আগামী চার মাস প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ ছাড়া নগদ দুই কোটি টাকা, ৫ হাজার ভান্ডিল টিন, ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেন মন্ত্রী। বগুড়া : জেলার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্রতিদিন পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে যমুনার তীরবর্তী নিচু এলাকা ডুবে গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী। অসময়ে বন্যা দেখা দেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে বন্যা আক্রান্ত লোকজনের মাঝে শুকনা খাবার চাল ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। বাগেরহাট : বাগেরহাটের চিতলমারীতে ঢাকা-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি গতকাল সন্ধ্যায় শৈলদাহ এলাকায় মধুমতি নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। এর ফলে সন্ধ্যা থেকে এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি দিয়ে ঢাকা-পিরোজপুরের সঙ্গে সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। গাইবান্ধা : নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার হার কমে এসেছে। গাইবান্ধার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কন্ট্রোল রুম জানায়, গত ৫-৬ দিন যে হারে পানি বাড়ছিল গতকাল কিছুটা থেমেছে। ব্রহ্মপুত্রের পানি না বেড়ে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে এখনো বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি ২২ সেন্টিমিটার কমেছে এবং করতোয়া ৪ সেন্টিমিটার ও ঘাঘটের পানি ১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

এগুলো বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তবে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার বিভিন্নস্থানে নদী ভাঙন ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে জেলার ৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ফুলছড়ি উপজেলায় পূর্ব কঞ্চিপাড়া-কাইয়ারহাট সংযোগ টিআর বাঁধ ধসে টেকেরহাট, মশামারীসহ পাঁচটি গ্রাম ও আবাদি জমি প্লাবিত হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর