বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে দুটি বালুঘাট বন্ধে হাই কোর্টের রুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

হাজার কোটি টাকার হাইটেক পার্কসহ তিন মেগা প্রকল্প হুমকিতে পড়ার আশঙ্কায় রাজশাহীর দুটি বালুঘাট বন্ধে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের ওপর রুলনিশি জারি করেছে হাই কোর্ট। বিচারপতি মোহাম্মদ আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাই কোর্ট বেঞ্চ ৯ এপ্রিল এ আদেশ দিয়েছে। হাই কোর্ট পরবর্তী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে ভূমি ও পানিসম্পদ সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী, রাজশাহীর জেলা প্রশাসক,        পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছে। রাজশাহীর নবগঙ্গা এলাকার বাবর আলীর করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট এ আদেশ দেয়। বাদীর আইনজীবীসূত্রে জানা যায়, রাজশাহী মহানগরীর মধ্যে পদ্মাতীরবর্তী হাড়–পুর ও নবগঙ্গা নামের দুটি বালুমহাল জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে আগামী বাংলা ১৪২৬ সালের জন্য মেসার্স রজব আলীকে ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ওই দুটি বালুমহাল রাজশাহী মহানগরীতে বাস্তবায়নাধীন হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক এলাকার কাছে অবস্থিত।

এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড পদ্মা তীরের ভাঙন রোধে সম্প্রতি ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হাড়–পুর থেকে নবগঙ্গা পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।

একই সঙ্গে পদ্মার উজানে নগরীর উপকণ্ঠ সোনাইকান্দি থেকে রাজশাহীর বুলনপুর পর্যন্ত আরও ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মায় ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করেছে পাউবো। আলোচিত নবগঙ্গা ও হাড়ুপুর বালুমহাল দুটি এসব মেগা প্রকল্পের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত। পদ্মা নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু তুলে প্রথমে নৌকায় ভরা হয়। পরে মোটা পাইপের মাধ্যমে বাঁধের ওপর দিয়ে বালু বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক এলাকায় জমা করে। এতে তীর সংরক্ষণ বাঁধের ওপর দিয়ে পানিমিশ্রিত বালু নদীতে পড়ায় বাঁধের অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কের মতো অতি গুরুত্বপুর্ণ প্রকল্পটিও বালুস্তূপের একেবারেই কাছে হওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। ফলে প্রকল্পের কাজের গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে জনস্বার্থে এ দুটি বালুমহালের ইজারা বাতিল করার জন্য বাবর আলী রিট করেন।

এদিকে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার খোরশেদ আলম খান জানান, বালুমহাল ইজারা দিয়ে সামান্য কিছু রাজস্ব আয়ের কারণে হাজার কোটি টাকার তিনটি মেগা প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবেÑ এমনটা হওয়া উচিতও নয় আবার যুক্তিযুক্তও নয়। জনস্বার্থে রিটকারী বালুমহাল দুটি বন্ধের দাবি করেছেন। হাই কোর্ট এ কারণে রুল দিয়েছে। এতে সরকারের প্রকল্পগুলো উপকৃত হবে।

এ ব্যাপারে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদের বলেন, রুলের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি জানান, মেগা প্রকল্প এলাকায় বালুমহালের উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় ইতিমধ্যে তিনি পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। জনস্বার্থে আদালত বালুমহাল বন্ধের আদেশ দিলে তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল ‘রাজশাহীতে তিন মেগা প্রকল্প বিপন্ন করে তুলেছে বালুঘাট’ শিরোনামে বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর