বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাবনায় শিক্ষকের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাসুদুর রহমানের ওপর ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হামলার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় অবস্থা চলছে।

ভুক্তভোগী ৩৬তম বিসিএসের শিক্ষক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘৬ মে কলেজের ১০৬ নম্বর কক্ষে উচ্চতর গণিত পরীক্ষায় পরীক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলাম। এ সময় দুজন পরীক্ষার্থী দেখাদেখি করায় তাদের সতর্ক করি। তারপরও তারা বিরত না হলে কিছু সময়ের জন্য খাতা জব্দ করে রাখায় তারা ক্ষুব্ধ হয়। এ ঘটনার পর বুঝতে পারছিলাম ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ। পরে ১২ মে বাড়ি ফেরার সময় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুনের নির্দেশে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাকে কিল, ঘুষি, লাথি মারে। পরে শিক্ষকরা এসে আমাকে উদ্ধার করেন।

এ রকম ঘটনার শিকার শুধু আমার বেলায় নয়, অন্তত আরও দশ শিক্ষকের ক্ষেত্রেও ঘটেছে। কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।’

এদিকে এই লাঞ্ছিতের ঘটনার পর মাসুদুরের বিরুদ্ধে এক পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

 শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা না নিলেও বানোয়াট অভিযোগের তদন্তে কমিটি করেছে কলেজ প্রশাসন। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনা সমগ্র শিক্ষক সমাজের জন্য অপমানের। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ চাই অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে। একাধিক শিক্ষক আরও বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় ছাত্র ও বহিরাগতদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। গত কয়েক বছরে অন্তত ১৫ শিক্ষক তাদের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়েছেন। কেউবা কলেজ থেকে নীরবে বদলি নিয়ে চলে গেছেন। গত দশ বছর ধরে কলেজের ছাত্র সংসদ ভবন দখলে রেখেছেন জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা। তার আশীর্বাদেই কলেজ ছাত্রলীগ চলে। দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ ছাত্রলীগকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে নিজেও অপকর্ম করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুন বলেন, ‘শিক্ষক মাসুদুরের ওপর হামলায় আমি বা ছাত্রলীগ জড়িত নয়। বহিরাগত সন্ত্রাসীরা স্যারকে আক্রমণ করলে আমরা প্রতিরোধ করে সন্ত্রাসীদের বের করে দিয়েছি।’ কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘শিক্ষকরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সর্বশেষ খবর