বুধবার, ১২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

অভিমানেই ঘটছে আত্মহত্যা

কাজী শাহেদ ও মর্তুজা নুর, রাজশাহী

অভিমানেই ঘটছে আত্মহত্যা

রাজশাহী অঞ্চলে বেড়ে গেছে আত্মহত্যার প্রবণতা। যার অধিকাংশই স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পুলিশ বলছে, শিক্ষার্থীরা বাবা-মার প্রতি অভিমান, প্রেমে ব্যর্থতা, শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অনকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে সাবধান থাকতে হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তরা যেন আত্মহত্যার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সেই বিষয়ে কাউন্সিলিং করতে হবে পরিবার থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহীতে অন্তত ৮ জন স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। কেউ বাবা-মার উপরে অভিমানে, কেউ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে, আবার কেউ আত্মসম্মানের ভয়ে। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২১ এপ্রিল বাঘায় দুই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা করে। একজন উপজেলার স্থানীয় কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রী তৃশা খাতুন (১৭)। অপরজন স্কুল পড়ুয়া নবম শ্রেণির ছাত্রী মুক্তি আক্তার (১৪)। তার দুদিন পরে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। গত ২৭ এপ্রিল রাবি সাবেক ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোকলেসুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমান অয়ন (২৫) সিলিং এর সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। কিন্তু মৃত্যুর কারণ জানতে পারেনি পুলিশ। গত ১৬ মে রাবি ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাকসুদার আক্তার স্মৃতি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। একই দিনে বাঘায় মায়ের উপর অভিমানে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। উপজেলার পীরগাছা গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফার স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী মৌসুমী (১৪) নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করত। পুলিশ জানায়, বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আবদুল ওয়াহাব জানান, পড়ার জন্য মা বকাবকি করায় সে আত্মহত্যা করেছে। ওই দিনে গোদাগাড়ীতে লজ্জা ও অভিমানে আত্মহত্যা করে স্কুল ছাত্র জসিম। এর আগে জসিমকে গ্রাম্য সালিশে জুতা পেটা করা হয়। ওই স্কুল ছাত্র উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের শাহাব্দিপুর গ্রামের মজিবুরের ছেলে ও পিরিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বর্ষা (১৪) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হোসেন জানান, বর্ষার বাবা তার মেয়ে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে- এমন অভিযোগে মামলা করেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, প্রত্যেক পরিবার থেকে সন্তানদের প্রতি একটি সমর্থনমূলক ভূমিকা থাকা দরকার। আমরা সন্তানদের উপর অনেক কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি, যা তাদের ধারণ ক্ষমতার উর্ধে। সন্তানরা আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পেরে হতাশায় ভোগে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর