বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, দুলু নির্ভর বিএনপি, জাপায় কাদের

রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট

শক্ত অবস্থানে আওয়ামী লীগ, দুলু নির্ভর বিএনপি, জাপায় কাদের

তিনটি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত লালমনিরহাট জেলা। এর মধ্যে একটি জাতীয় পার্টির ও দুটি আওয়ামী লীগের

দখলে রয়েছে। টানা ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ থাকলেও সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ারের প্রচেষ্টায় শক্ত অবস্থানে রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। আর তৃণমূল জাপার বোঝা এখন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের কাঁধে। সদর আসনের এই সংসদ সদস্য তৃণমূল জাপার আস্থার প্রতীক। জাপা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থেকেও জেলা জাপাকে সংগঠিত করার কাজ করছেন তিনি। লালমনিরহাট-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য কয়েকবার এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে থাকায় এখানকার মানুষের কাছে নিজেকে গ্রহণীয় করে নিয়েছেন। পরিচ্ছন্ন ও সৎ নেতা হিসেবে সুনাম থাকায় কাদেরকে নিয়ে গর্ববোধ করেন লালমনিরহাটের প্রান্তিক মানুষ। জেলার       পাঁচ উপজেলার মধ্যে অধিকাংশ উপজেলায় দলটির কমিটি নেই। কোনো উপজেলায় কমিটি থাকলেও ওই কমিটির নেতারা মাঠে থাকছেন না। জেলা জাপার সহযোগী সংগঠনগুলোর অবস্থা দুর্বল হলেও লাঙ্গলের ওপর ভরসা রয়েছে সাধারণ মানুষের। তবে জেলা জাপার সদস্য সচিব সেকেন্দার আলী বলেন, পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেন মোহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর শোক এখনো আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তবে শিগগিরই দল গোছাতে মাঠে নামা হবে। অন্যদিকে দীর্ঘ ১৩ বছর ক্ষমতার বাহিরে থাকা জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর লালমনিরহাটের ভরসার প্রতীক কেন্দ্রীয় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। জেলার পাঁচটি উপজেলায় অঙ্গসংগঠনের কমিটির মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও কেন্দ্রীয় কমিটির নিষেধাজ্ঞা থাকায় নতুন কমিটি গঠনের কাজ হাত দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা। তবে অন্তর্কোন্দল থাকলেও জেলার সব শ্রেণির নেতা-কর্মী দুলুর অনুসারী। দুলুর নির্দেশেই চলে এখানকার বিএনপির রাজনীতি। তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের কোনো কমিটিই নেই এ জেলায়। কেন্দ্রীয় ২০-দলীয় জোটের বিভিন্ন র্কমসূচিতে স্থানীয়ভাবে বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো দলের দেখা মেলে না। বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মী পৃথকভাবে আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করতে আগ্রহী। তাদের মধ্যে নেই কোনো সমন্বয়। এ জেলায় ২০-দলীয় জোটের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের সাংগঠনিক অবস্থান থাকলেও বাকি ১৮ দলের কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে সাধারণ ভোটাররা বলছে বিএনপির রাজনীতিতে লালমনিরহাটে দুলু ছাড়া বিএনপির অস্তিত্ব ম্লান। তবে সম্প্রতি ঘোষিত জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে দুলুর ওপর নাখোশ দলের অনেক নেতা। তবে সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটি নিয়ে তুষের আগুনে জ্বলছে লালমনিরহাটের বিএনপির বঞ্চিত ও ত্যাগী নেতারা। অনেকে যোগ্য নেতা মূল্যায়ন না পেয়ে পদত্যাগও করেছেন।

এ ব্যাপারে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলায় জর্জরিত  নেতা-কর্মীরা। এখানে কোনো বিভেদ নেই। জেলা উপজেলায় সব কমিটিই রয়েছে।

লালমনিরহাট আওয়ামী লীগেও রয়েছে ভাগ বাটোয়ারার বিরোধ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি জেলা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করায় সব সময় তাকে কাছে পান না দলের নেতা-কর্মীরা। সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমানের দৃঢ় প্রচেষ্টায় শত বিরোধের মাঝেও শক্ত অবস্থানে রয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এদিকে টানা দুই বারে মন্ত্রিত্ব পাওয়া সমাজকল্যাণমন্ত্রী সরকারের উন্নয়নের ধারা জেলাজুড়ে চালু রাখায় নুরুজ্জামানের ওপরই বেশি আস্থা তৃণমূল আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষের। দল প্রসঙ্গে নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বৃহৎ দল, সামান্য বিভেদ থাকতে পারে, তবে জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর