সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ভাইজানদের নিয়ে ক্লান্তি তৃণমূলে

আকবর হোসেন সোহাগ, নোয়াখালী

ভাইজানদের নিয়ে ক্লান্তি তৃণমূলে

নোয়াখালীতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা মামলায় জর্জরিত। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কমিটির মেয়াদও শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া বিএনপির বিভিন্ন উপজেলায় কমিটি নেই। কিছু কিছু উপজেলায় আবার মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির জোরালো আন্দোলন না থাকায় জেলার তৃণমূলে অনেক নেতা-কর্মীও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলা পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির কমিটি বা সম্মেলন না হওয়ায় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা দলীয় কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়ে পড়ছেন। অধিকাংশ উপজেলায় প্রধান দুই দলের কাজকর্ম চলছে পুরনো কমিটি দিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে একই ‘ভাইজান’রা পদে বসে আছেন। তাদের দেখতে দেখতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্লান্ত। দুই দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ববর্তী মামলার বেড়াজালে আটকা পড়ে জর্জরিত। প্রতিনিয়তই হাজিরা দিচ্ছেন আদালতে। দলের সক্রিয় বেশির ভাগ নেতা-কর্মী মামলার আসামি। ফলে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করার কথা থাকলেও পালিত হচ্ছে সীমিত আকারে। অন্যদিকে প্রকাশ্যে জামায়াত-শিবিরের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড না দেখা গেলেও ভিতরে ভিতরে চলছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। মামলায় কাতর হয়ে আত্মগোপনে গেলেও তারা ‘সুদিন’-এর  অপেক্ষায় কালাতিপাত করছেন। জাতীয় পার্টির তেমন কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখা যায় না। রাজপথে বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্দোলন না থাকায় জেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা হতাশ। জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। সেখানে তিনি অবশ্য সক্রিয়। অভিযোগ উঠেছে, জেলা বিএনপি ও উপজেলার ২/৩ জন শীর্ষ নেতা সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে গড়ে তুলছেন ধন-সম্পদ। এ নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ। রাজপথে নেই অপজিশন, এ সুযোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিভিন্ন অফিসে টেন্ডার ও তদবির বাণিজ্যে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন বলে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জানান। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুর রহমান জাবেদ জানান, একরামুল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ আজ সুসংগঠিত। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। একই অভিমত ব্যক্ত করলেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ওমর ফারুক। জেলা বিএনপি সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে চাঙ্গা করতে নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন মাঠে। বিভিন্ন উপজেলার ওয়ার্ড কমিটিগুলো পুনর্গঠন করছেন। তিনি জানান, হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ ও সোনাইমুড়ীতে বিএনপির কোনো কমিটি নেই। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে বিএনপি খুবই শক্তিশালী। জেলা বিএনপির কমিটির মেয়াদও শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া জাতীয় নির্বাচন-পূর্ববর্তী অসংখ্য মামলা-হামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা জর্জরিত। প্রতি সপ্তাহে তাদের আদালতের বারান্দায় হাজিরা দেওয়ার জন্য আসতে হয়। জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম জানান, আওয়ামী লীগ সব সময় রাজপথে আছে। বিএনপির কোনো কমিটি নেই। তিনি আরও জানান, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদও আগামী অক্টোবরে শেষ হবে। ১৫ আগস্ট শোক দিবস নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন।

সর্বশেষ খবর