শিরোনাম
শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে আইসিইউ যেন সোনার হরিণ

হাসপাতালের সামনে থেকে ফিরছেন মুমূর্ষু রোগী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। প্রতিদিন চারটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছেন শতাধিক। আক্রান্ত শনাক্তের পাশাপাশি বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যাও। সিলেটে করোনা ডেডিকেটেড ‘শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে’ ঠাঁই মিলছে না রোগীদের। ১০০ শয্যার হাসপাতালটি সবসময়ই রোগীতে থাকছে পূর্ণ। সাধারণ শয্যা বা আইসিইউ খালি নেই কোথাও। বিশেষ করে আইসিইউ যেন সোনার হরিণ। সিট খালি না থাকায় বাধ্য হয়ে হাসপাতালে আসা মুমূর্ষু রোগীদেরকেও ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

সিলেট বিভাগের চার জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে কভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে ২১টি। এর মধ্যে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬টি ও মৌলভীবাজার হাসপাতালে ৫টি। বিভাগের সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউর ব্যবস্থা নেই।

চিকিৎসার মান ও সেবা ভালো হওয়ায় করোনা আক্রান্ত বা করোনার লক্ষণযুক্ত রোগীর অবস্থা খারাপ হলেই নিয়ে আসা হয় শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। কিন্তু হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে শয্যা সংকট থাকায় সব রোগীকে ভর্তির সুযোগ দিতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সিট খালি থাকলে করোনা আক্রান্ত ‘সিরিয়াস’ রোগীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন হাসপাতালটিতে। আর নমুনা পরীক্ষা না করিয়ে করোনার লক্ষণযুক্ত কোনো রোগী এলে তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার সিলেটে ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে মুমূর্ষু এক রোগীকে নিয়ে আসা হয় শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। ওই রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন হয় আইসিইউ সাপোর্ট। কিন্তু সিট খালি না থাকায় রোগীকে ভর্তির সুযোগ দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউর খরচ বেশি হওয়ায় করোনা আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের প্রথম পছন্দে থাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। কিন্তু রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ভর্তি হতে না পেরে হাসপাতালের সামনে থেকেই ফিরে যেতে হচ্ছে তাদেরকে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আইসিইউ বেড ১৬টি এবং ওয়ার্ড ও কেবিন মিলে সিট আছে ৮৪টি। এর মধ্যে আইসিইউর দুটি বেড নষ্ট রয়েছে। গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে ১৪ বেডের বিপরীতে ভর্তি ছিলেন ১৩ জন রোগী। আর ওয়ার্ড ও কেবিন মিলিয়ে রোগী ভর্তি ছিলেন আরও ৬৫ জন।

শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানান, পুরো হাসপাতালই রোগীতে পরিপূর্ণ। কোনো রোগী মোটামুটি সুস্থ হলেই তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর সেই সুযোগে যে সিট খালি হচ্ছে সেটাতে নতুন রোগী ভর্তি করা হচ্ছে। আইসিইউতে সিট সংকট বেশি হওয়ায় করোনা প্রমাণিত রোগী ছাড়া ‘সাসপেক্টেড’ রোগী ভর্তি করা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর