মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সিলেটে ঘাটতি নেই বিদ্যুতের, তবুও ভোগান্তি চরমে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের সরবরাহ প্রায় তিন গুণ। কোনো ঘাটতি নেই বিদ্যুতের। এরপরও বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তি পৌঁছেছে চরমে। উন্নয়নের নামে সপ্তাহের প্রতি শনিবার টানা ১০ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এ ছাড়া প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ বার আসা-যাওয়া করে বিদ্যুৎ। এই আসা-যাওয়াকে লোডশেডিং বলতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, উন্নয়ন কাজের জন্যই এই ভোগান্তি। আর এই ‘উন্নয়ন ভোগান্তিতে’ সিলেটে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) ৪ লাখ গ্রাহকের ত্রাহি অবস্থা। সিলেট জেলায় বিউবোর গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ৪ লাখ। আর গ্রাহকদের বিদ্যুতের চাহিদা ১৪৪ থেকে ১৪৫ মেগাওয়াট। কিন্তু সিলেটে সরবরাহ রয়েছে প্রায় ৪৩০ মেগাওয়াট। চাহিদার প্রায় তিন গুণ সরবরাহ থাকলেও স্বস্তিতে নেই সিলেটের মানুষ। বিদ্যুতের ভোগান্তি এখন সিলেটের মানুষের নিত্যসঙ্গী। আকাশে মেঘ জমলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। আর সামান্য ঝড়ো হাওয়া হলে তো আর দুর্ভোগের শেষ নেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অন্ধকারে ঢাকা থাকতে হয় সিলেটবাসীকে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিরূপ আবহাওয়া ছাড়াও অন্ত নেই বিদ্যুৎ ভোগান্তির। প্রতিদিন টানা ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকছে সিলেটের বিভিন্ন এলাকা। এ ছাড়া দিন-রাত সমানতালে চলে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়া। এতে অনেক গ্রাহকের ইলেকট্র্রনিক্স জিনিসপত্রও নষ্ট হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সারা দিন বিদ্যুৎ নিয়ে ভোগান্তি চললেও এটা লোডশেডিং নয় বলে দাবি করছেন বিউবোর প্রকৌশলীরা। তাদের দাবি, সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকার ফিডারগুলোতে সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ, তার ও খাম্বা বদলানো এবং সঞ্চালন লাইন মাটির নিচ দিয়ে নেওয়ার কাজ চলমান থাকায় গ্রাহকদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় ফিউজ পুড়ে যাওয়ার কারণেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি করছেন তারা।

সিলেট নগরীর জেল রোডের মো. ডালিম আহমদ জানান, প্রতি শনিবার সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। এ ছাড়া দিনে প্রায় প্রতি ঘণ্টায়ই বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। গভীর রাতেও বিদ্যুৎ চলে যায়। ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে তার বাসার ফ্রিজ নষ্ট হয়ে গেছে।

তবে বিউবো সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানিয়েছেন, এখন যে ভোগান্তি চলছে রমজানে সেটা থাকবে না। কেবল আগামী শনিবার অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল উন্নয়ন কাজের জন্য টানা ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া পুরো রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের চেষ্টা করা হবে।

প্রধান প্রকৌশলী আরও জানান, সিলেটে বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। তবে সিলেটে পুরনো তার ও খাম্বা পরিবর্তনের কাজ চলছে। আন্ডারগ্রাউন্ড সঞ্চালন লাইনেরও কাজ চলমান। যে কারণে এখন গ্রাহকদের বিদ্যুৎ ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর