সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

ফুরফুরে হাবিব, কর্মী সংকটে আতিক, শফি চলছেন একলা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ফুরফুরে হাবিব, কর্মী সংকটে আতিক, শফি চলছেন একলা

দুয়ারে কড়া নাড়ছে সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন। এ আসনে ভোট গ্রহণ ২৮ জুলাই। আসনটি নৌকার দখলেই থাকবে, নাকি আসন পুনরুদ্ধার করতে পারবে লাঙ্গল, এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃৃত শফি আহমদ চৌধুরীও আছেন আলোচনায়।

করোনা আতঙ্কের মধ্যেও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে সরব থাকায়  বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। আর দলের সাংগঠনিক অবস্থান শক্তিশালী না থাকায় কর্মী সংকটে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে নির্বাচনী মাঠে ‘একলা চলো নীতিতে’ চলছেন শফি আহমদ চৌধুরী।

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। এর মধ্যে তিনজনই দলীয় প্রার্থী ও একজন স্বতন্ত্র। নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী। প্রার্থী হওয়ার পর দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নেতা-কর্মীদের তার পক্ষে প্রচারণায় না নামতে কঠোর হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। শফি চৌধুরীর পক্ষ থেকে প্রচারণায় অংশ নিয়ে ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কৃত ও শোকজ নোটিস পেয়েছেন একাধিক নেতা। ফলে নির্বাচনী মাঠে অনেকটা একা হয়ে পড়েছেন শফি। তবে ব্যক্তি ইমেজ ও সংসদ সদস্য থাকাকালীন এলাকায় উন্নয়নের কারণে সাধারণ ভোটারদের একটি অংশ রয়েছে তার পাশে। এ ছাড়া নীরবে দলের একটি অংশ শফি চৌধুরীকে সাহস ও শক্তি জুগিয়ে যাচ্ছে।

ভোটারদের ধারণা, প্রকাশ্যে দল সঙ্গে না থাকায় ভোটের মাঠে শফির চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ও জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক। হাবিবের পক্ষে দলের  নেতা-কর্মীরা মাঠে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের ধারণা, কর্মীরা সক্রিয় থাকায় নৌকার পক্ষের ভোট প্রয়োগ বেশি হবে। তবে দলের একটি অংশ নীরবে হাবিবের বিপক্ষে কাজ করছে- এমন গুঞ্জনও রয়েছে এলাকায়। আর যদি শেষ পর্যন্ত এমনটি হয়ে থাকে, তবে গেল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে হাবিবকে।

গতকাল সিলেটে হাবিবের প্রচারণায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের ভোটের মাঠে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। দুই কেন্দ্রীয় নেতার এই সফর হাবিবের নির্বাচনী পালে হাওয়ার বেগ বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

সিলেট-৩ আসনকে একসময় বলা হতো জাতীয় পার্টির ঘাঁটি। এই আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ছিলেন জাতীয় পার্টির এম এ মুকিত খান। সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী না হলেও আসনটির অন্তর্ভুক্ত তিন উপজেলায় রয়েছে এরশাদ ভক্ত ও জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক। সেই ভোটব্যাংককে কাজে লাগাতে রাতদিন এলাকায় ঘাম ঝরাচ্ছেন লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। তবে কর্মী না থাকায় মাঠের ভোটারকে কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে আসা নিয়ে শঙ্কিত দলের নেতারা। শেষ পর্যন্ত ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করা গেলে হাবিবের জয়ের পথে শক্তিশালী প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারেন আতিক। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একাংশ ও বিএনপির একাংশেরও নীরব সমর্থন রয়েছে আতিকের প্রতি, এমন গুঞ্জন আছে নির্বাচনী এলাকাজুড়ে।

সর্বশেষ খবর