শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কালিয়াকৈরে গ্যাস সংকটের কবলে শিল্পকারখানা : উৎপাদন বিঘ্নিত

কারখানার মালিকরা ভুগছেন নতুন আতঙ্কে উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

কালিয়াকৈরে গ্যাস সংকটের কবলে শিল্পকারখানা : উৎপাদন বিঘ্নিত

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার শিল্পকারখানা ও সিএনজি ফিলিং স্টেশনে আবার গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এতে  কারখানার মালিকরা নতুন আতঙ্কে ভুগছেন। গ্যাস সংকট বা গ্যাসের চাপ কম থাকায় কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে একাধিক কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। কালিয়াকৈর শিল্পাঞ্চল দেশজুড়ে দ্রুত পরিচিতি পাওয়ায় শহরের প্রায় সব সুবিধাই রয়েছে। ফলত এ উপজেলায় বিভিন্ন ধরনের রপ্তানিমুখী বহু শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। যেমন ওষুধ, জুতা, কোমল পানীয়, জুট, স্পিনিং, সোয়েটার ও গার্মেন্ট কারখানা। বেশির ভাগ কারখানা বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ওপর শতভাগ নির্ভরশীল।

জানা গেছে, সফিপুরের মাহমুদ ডেনিমস লিমিটেড, একই মালিকের করতোয়া স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ডংবাইং, সানজি, যমুনা গ্রুপের যমুনা স্পিনিং ডিভিশন কারখানা, মালেক স্পিনিং, রহিম টেক্সটাইল, ময়জুদ্দিন স্পিনিং, এপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং, পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার স্টার লি., এপেক্স ফুটওয়ার লিমিটেডসহ অর্ধশতাধিক কারখানায় চাহিদামতো তিতাস গ্যাসের প্রেসার না পেয়ে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমানে জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের যমুনা সেতু পর্যন্ত এবং সাভারের ইপিজেড এলাকায়ও তিতাস গ্যাসের চাপ কম। গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকার কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিনই কারখানায় সকাল ১০টায় গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। এ অবস্থা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলতে থাকে। গ্যাসের চাপ কমার সঙ্গে সঙ্গে কারখানার গ্যাসচালিত জেনারেটর বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কারখানার বেশির ভাগ মেশিন বন্ধ রেখে কিছু কিছু মেশিন চালু রাখতে হচ্ছে। এতে কারখানার উৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে, সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, কালিয়াকৈরে ৩ শতাধিক শিল্পকারখানা। তার মধ্যে পোশাক কারখানা বেশি। ফলে কালিয়াকৈরের কারখানা গ্যাসের জন্য উৎপাদন করতে না পারলে পুরো রপ্তানি খাতই ভুগবে। এদিকে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে বুধবার থেকে দৈনিক ৬ ঘণ্টা (বিকাল ৫টা-রাত ১১টা) করে সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। ৭ জুলাই মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (পিক আওয়ারে) সিএনজি স্টেশন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সফিপুরের মাহমুদ ডেনিমস লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাসের চাপ কম থাকায় কারখানার উৎপাদন কমে যাচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে জেনারেটর লোড নিতে না পারায় সময়মতো পণ্য উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কারখানার উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। কালিয়াকৈরে মাহমুদ ডেনিমসসহ আটটি কারখানা রয়েছে আমাদের। ওইসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় অর্ধলক্ষ শ্রমিক। এভাবে কারখানার উৎপাদন কমতে থাকলে কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। বেকার হয়ে পড়বেন শ্রমিকরা।’

রহিম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার আহসান আলী সরদার বলেন, ‘বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হতো তাই গ্যাস জেনারেটর ব্যবহার করছি কিন্তু কয়েক দিন ধরে গ্যাসের চাপ কম থাকায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে।’

তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ট্রান্সমিশনের চন্দ্রা জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ‘সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে গ্যাসের এ সংকট শিগগিরই দূর হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর