বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ব্যয় না কমিয়ে আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা

মানিক মুনতাসির

ব্যয় না কমিয়ে আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা

প্রায় দুই বছর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য। এর পরপরই করোনাভাইরাসের বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার। যদিও সরকার এর শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি, তবু মহামারী করোনার ধাক্কায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের অর্থনীতি ধরাশায়ী হলেও বাংলাদেশ তা ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক ধারায় চলে গেছে। কিন্তু এমন বিরূপ সময়েও বাংলাদেশ ৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও কর্মসংস্থানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে করোনার প্রভাব কমে এলেও সরকারের আয় কমে এসেছে। পাশাপাশি ব্যয়ও বেড়েছে। ফলে ব্যয় না কমিয়ে আয় বাড়ানোর পথ খুঁজছে সরকার। নিয়মিত রাজস্ব আয়ের বাইরে নতুন কোনো আয়বর্ধক কর্মসূচি নেওয়া যায় কি না তা নিয়ে ভাবছে সরকার। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। সরকার মনে করে ২০২০-২১ বাজেট ঘোষণার সময় ছিল করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউয়ের অচলাবস্থা। এরপর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও তা ধরে রাখা যায়নি। বিশ্বব্যাপী আবারও শুরু হয় দ্বিতীয়, তৃতীয় দফা সংক্রমণ। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এই সময়ে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে কর্মসংস্থান।

বেড়েছে বেকারত্ব। দ্বিগুণ হারে বেড়েছে দারিদ্র্য। এ ছাড়া কাক্সিক্ষত স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে পোহাতে হয়েছে চরম দুর্ভোগ। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও অর্থনীতিতে রয়েছে অস্বস্তি। এ অস্বস্তি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় সরকার। ফলে আয় বাড়িয়ে সরকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চায়।

সূত্রমতে, টানা কয়েক বছর গতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে বাংলাদেশ। একটানা প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশের ওপরে। পাশাপাশি স্থিতিশীল মূল্যস্ফীতি, নিম্ন সরকারি ঋণপ্রবাহ এবং বাইরের অভিঘাতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। বৈশ্বিক মহামারী করোনায় প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত হয়। তবু বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। ফলে আগের ধারা থেকে বেরিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরেও উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে চায় সরকার। অবশ্য বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ বলছে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে এবারও।

চলতি অর্থবছরও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী। করোনায় বিপর্যস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাজেটে স্বস্তিদায়ক কর-ভ্যাট নীতি অবলম্বন করা হয়।

এদিকে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল দ্রুত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অবশ্য দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা নিলেও তা কাজে আসেনি। সব শ্রেণির মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলেছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর