বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

আইসিইউতে আকিব, দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের অপেক্ষা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিব। আহতের পর তার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। আকিবের মাথার হাড়টি অন্যত্র রাখা হয়। এখন চিকিৎসরা তার মাথার হাড়টি পুনঃস্থাপন করতে দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে এটি কখন করা হবে তা এখনো নির্ধারণ হয়নি। তা নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির ওপর। গতকাল দুপুরে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়। জানা যায়, ২৯ অক্টোবর চমেকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত হন চমেক ছাত্র মাহফুজ ও নাইমুল নামে দুজন। সংঘর্ষের জেরে শনিবার সকালে চমেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে মাত্র ৫০ সেকেন্ডেই ৮-১০ জন যুবক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলা চালিয়ে থেঁতলে দেয় তার মাথার খুলি। ওই দিনই কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা এবং সন্ধ্যা ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। শনিবার সকালে আকিবের ওপর হামলার পর তাকে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।

 জখম গুরুতর হওয়ায় আকিবের পুরো মাথায় লাগানো হয় সাদা ব্যান্ডেজ। চিকিৎসকরা এতে লিখে দেন ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’। এ লেখাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হৃদয় নাড়া দেয় মর্মস্পর্শী এ লেখাটি। আকিব চমেকের এমবিবিএস ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই পরস্পরের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়েছে। 

চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, ‘আকিব আগের তুলনায় ভালো। এখন মুখ দিয়ে খেতে পারছে। দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার করা হবে। এটি নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থা ইতিবাচক উন্নতির ওপর। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, আকিবের মাথায় যে স্পর্শকাতর অস্ত্রোপচার হয়েছে, তা অনেক জটিল। চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা আন্তরিক ছিলেন বলে সফল একটি অস্ত্রোপাচার সম্ভব হয়েছে। আশা করি, বাকি চিকিৎসাও আন্তরিকতার সঙ্গে সফলভাবে সম্পন্ন করা হবে। আমরা আকিবের মুখে হাসি দেখার অপেক্ষায়।  

চমেকের ৫৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আকিবের শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় ভালো। তবে চিকিৎসকরা আইসিইউ কক্ষে যেতে নিষেধ করেছেন। সেখানে তার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

গতকাল দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আইসিইউ বিভাগের প্রধান ফটকটিতে তালা লাগানো হয়েছে। সেখানে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। প্রবেশপথেই আছেন তিন পুলিশ সদস্য। তারা অনুমতি ছাড়া ভিতরে কাউকে যেতে দিচ্ছেন না। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা বললেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হামলায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীকে ভর্তির পর থেকে পাহারা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এখানে প্রবেশে কড়াকড়ি করা হয়েছে।’ 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর