রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সিসিক-চালক মুখোমুখি

কাল অভিযান শুরু ♦ হ চালকদের নিয়ে আন্দোলনে বাম নেতারা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও রিকশা চালক-মালিকরা। আগামীকাল সোমবার থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। আর এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন রিকশা মালিক-শ্রমিকরা। রিকশা মালিক-শ্রমিকদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাম সংগঠনের নেতারা। গতকাল শনিবার ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে রিকশা শ্রমিকদের নিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছেন বাসদ নেতারা। নিষিদ্ধ হওয়ার পরও সিলেটে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চলাচল করছে ইজিবাইক। অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে আহত হচ্ছেন চালক, যাত্রী ও পথচারী। এসব রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জের জন্যও অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নগরীতে কয়েকটি সিন্ডিকেট মিলে এ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বাম সংগঠনের কতিপয় শ্রমিক নেতাও জড়িত আছেন বলে জানা গেছে। তাদের মদদেই মূলত সিলেটে চলছে এ অবৈধ রিকশা ও ইজিবাইকের ব্যবসা। সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ৮ নভেম্বর থেকে নগরীতে অভিযানে নামার আগাম ঘোষণা দেয় সিসিক। এরপর থেকে বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারা ওয়ার্ড ও কলোনিভিত্তিক সভা করে রিকশা মালিক-শ্রমিকদের সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু করেন। সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে তাদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সিটি করপোরেশন যখন অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ঠিক তখনই গতকাল নগরীর আম্বরখানায় বাসদ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা। ‘রিকশা, ব্যাটারি রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির মহানগর শাখার সংগঠক ও বাসদ নেতা প্রণব জ্যোতি পাল। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেটের সমন্বয়ক আবু জাফর। সমাবেশ থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক ধরপাকড় বন্ধ ও এগুলোকে বৈধতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। আন্দোলন প্রসঙ্গে বাসদ নেতা আবু জাফর বলেন, দেশ ডিজিটাল হচ্ছে। কিন্তু দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কর্মহীন করে ডিজিটাল দেশের সুফল ভোগ সম্ভব নয়।

ব্যাটারিচালিত রিকশা ও  ইজিবাইক চালিয়ে দেশে লাখ লাখ পরিবার তাদের পেটের ভাতের সংস্থান করছেন। তাই বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো অমানবিক।

এদিকে, কোনো আন্দোলনই সিটি করপোরেশনের অভিযান ব্যাহত করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে অভিযান হবে। এতে কেউ বাধার সৃষ্টি করলে আদালত অবমাননা করবেন। যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন, বিশৃঙ্খলা করবেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’

প্রসঙ্গত, এর আগেও নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করতে অভিযান চালায় সিসিক। জুন মাসে অভিযান শুরুর পরই ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক ও চালকরা আন্দোলনে নামেন। ওই সময় নগরভবনেও হামলা চালান তারা। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর