মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

তুরস্কের সুফিদের ঘূর্ণিনাচে বিমোহিত দর্শক

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

যন্ত্রসংগীতের সঙ্গে নৃত্যের মিশেলে সুফিবাদের মোহনীয়তায় অনন্য এক সন্ধ্যার সৃষ্টি হলো শিল্পকলা একাডেমিতে। ইনস্ট্রুমেন্টের তালে আর শাস্ত্রীয় ঘরানায় তুরস্কের সুফি শিল্পীরা তুলে ধরলেন মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি, শামস তাবরেজি, হাফিজ, সাদি, নিজামি গজনবি ও ফেরদৌসির সুফিদর্শন। দেশটির ট্র্যাডিশনাল মিউজিক ‘নি, উড ও কমবাস’-এর যোগে সুফিনাচে বিমোহিত হলেন শিল্পকলায় আগত দর্শক-শ্রোতারা। ট্র্যাডিশনাল সুরের সঙ্গে তুরস্কের সুফিশিল্পীদের ঘূর্ণিনাচে সুফিবাদের মাধ্যমে সমসাময়িক বিষয়গুলো তুলে ধরেন সুফিবাদের দেশ হিসেবে পরিচিত তুরস্কের সুফি ড্যান্সাররা। সুফিতত্ত্বের পরতে পরতে মানবতা ও শান্তির কথাই বলেন শিল্পীরা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের বাউল শিল্পীদের ভাববাদী গান ভিন্নমাত্রা এনে দেয় সুফিবাদের এ আসরে। শিল্পকলা একাডেমি ও তুরস্ক দূতাবাস আয়োজিত ‘সুফি এনকাউন্টার’ শিরোনামের আসরে সুফিনাচ ও বাউল গানের এমন দৃশ্যকল্পই চিত্রিত হলো। গত সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ এ আসর।

ইনস্ট্রুমেন্টালের সঙ্গে সঙ্গে নাচের ঘূর্ণিতে সৃষ্টিকর্তার কাছে ফরিয়াদ, আকাক্সক্ষা ও মনোবাসনা তুলে ধরেন বিদেশি এই শিল্পীরা। নাচের ঘূর্ণির বাঁকে বাঁকে ছিল স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা, মানবতার জয়গান আর সেই সঙ্গে ছিল সব হানাহানি আর বিদ্বেষ ভুলে শান্তির পৃথিবী গড়ার উদাত্ত আহ্বান। ইসলাম, শান্তি ও মানবতা যে একে অন্যের পরিপূরক সুফির ঘূর্ণিনাচে তারই নান্দনিক উপস্থাপন করলেন তুরস্কের চার সুফিশিল্পী ইসহাক উরিন, হাসান হেকিমগলু সায়িদ সারকান সেলিক ও বুরাক মালকুক।

আর বাংলাদেশের পর্বে লালনের ভাববাণী ও দেহতত্বের বাউল গান পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমির বাউল দল। এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তোরান। সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।

লিয়াকত আলী লাকী বলেন, সুফিবাদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানবতার ধর্ম। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-ও সবকিছুর আগে মানবতা ও শান্তির কথা এবং সাম্যের কথা বলেছেন। সবকিছুর আগে নবীজি মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সুফিবাদে ইসলামের সৌন্দর্য ও সাম্যের বার্তা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম স্মরণে বাংলা একাডেমি : কথামালা আর স্মৃতিচারণায় বাংলা একাডেমির সভাপতি, ফেলো, সাবেক মহাপরিচালক, ভাষাসংগ্রামী, প্রখ্যাত নজরুল গবেষক ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে স্মরণ করেছে বাংলা একাডেমি। গতকাল বিকালে একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এ স্মরণানুষ্ঠান। একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সভাপতিত্বে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক, ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, কবি কামাল চৌধুরী, শিল্পী ড. লিনা তাপসী খান, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় আসানসোল, ভারতের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোনালিসা দাস, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে, বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ড. মনিরুল ইসলাম খান প্রমুখ।

এতে পরিবারের পক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি স্মৃতিচারণায় অংশ নেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সহধর্মিণী জাহানারা ইসলাম এবং কন্যা মেঘলা ইসলাম।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলা একাডেমি অচিরেই রফিকুল ইসলাম রচনাবলি প্রকাশ করবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর