রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মাইলেজ নিয়ে জটিলতা এখনো কাটেনি। দীর্ঘদিন এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বঞ্চিত রেল কর্মচারীরা। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিল না করলে পরদিন থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। গত বছরের ২১ নভেম্বর রানিং স্টাফরা মাইলেজসহ নানা বিষয়ের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রীকে। এরপর সচিব, মহাপরিচালকসহ দায়িত্বশীলরা আশ্বাস দেন মাইলেজ রীতিতে বেতন-ভাতা দেবেন। সেটি আশ^াসেই রয়ে গেল।
রেলওয়ে শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রেলের মাইলেজ আন্দোলনের অন্যতম নেতা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দিনের পর দিন শ্রম, মেধা এবং সততার সঙ্গে কাজ করে আসছি। কিন্তু ন্যায্য দাবিটা দিচ্ছেন না। প্রায় ১৬০ বছর আগের রীতি এখন ভিন্নভাবে নেওয়া হচ্ছে। কেন বঞ্চিত হব ন্যায্য পাওনা থেকে?’
তিনি বলেন, ‘মাইলেজ রীতি আমাদের অধিকার। একটি প্রজ্ঞাপনের কারণে যারা চাকরি করছেন শুধু তারা নন, সদ্য অবসরে গেছেন তারাও মাইলেজ-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে চূড়ান্ত পাওনাদি পাননি। অনেক ধৈর্য ধরেছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছি।’ ৩০ জানুয়ারির মধ্যে অধিকার ফিরিয়ে না দিলে পরদিন থেকে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে জানান তিনি।রেলওয়ে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৬০ বছর পুরনো রেলওয়ে রানিং স্টাফদের মাইলেজ পদ্ধতি। সম্প্রতি আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে রানিং স্টাফদের বেতন-ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রেলওয়ের রানিং স্টাফ মাইলেজসহ বিভিন্ন ভাতার বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় কর্মচারীদের মধ্যে। এতেই জটিলতার মুখে পড়েছে রেলওয়ে। এক বছর ধরে বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও কূলকিনারা না পেয়ে অবশেষে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রানিং স্টাফরা। রেলের বিভিন্ন স্থানে কোনো না কোনো সময় সভা-সমাবেশসহ আন্দোলন করে আসছেন তারা। সর্বশেষ ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শামীম বানু শান্তি স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- চলন্ত ট্রেনে দৈনিক ১০০ কিলোমিটার কিংবা তারও বেশি দায়িত্ব পালন করলে ওই দিনের বেতনের ৭৫ শতাংশের বেশি মাইলেজ ভাতা পাবেন না সংশ্লিষ্ট রানিং স্টাফ।
আর মাস শেষে এ মাইলেজ মূল বেতনের বেশি হবে না। এ প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন রানিং স্টাফরা।