সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

ডিবি পরিচয়ে ঢাবি শিক্ষার্থীকে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

রাজধানীর আজিমপুরের একটি মেস থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি) পরিচয়ে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে আশিকুর রহমান নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ওই শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা আশিকুরের পরিবারকে জানানো হয়নি। এদিকে, আশিকুর রহমানের সন্ধান ও অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার বিকালে এ দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করেছে তারা। আশিকুরের রুমমেট মো. মুহসিন জানান, আজিমপুরে বিডিআর দুই নম্বর গেটের কাছে একটা বাসায় আমরা থাকি। আমাদের ফ্ল্যাটের বিপরীত দিকের ফ্ল্যাট থেকে হিজবুত তাহরিরের কয়েকজনকে রাতে অভিযান চালিয়ে ধরে ডিবি। পরে আমাদের রুমে এসে ফোন, ল্যাপটপ নিয়ে চেক করে। ডিবির একজন আমাদের বলে ‘তোমরা দুজনই জড়িত আছো’।

 আরেকজন আমাকে বলে ‘তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি। ভালো হয়ে যাবা’। পরে আশিক ভাইকে নিয়ে যায়। বলে, ‘মিন্টো রোডে নিয়ে যাওয়া হবে। (হিযবুত তাহরিরের সঙ্গে) জড়িত না থাকলে ছেড়ে দেওয়া হবে।’ এ সময় পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও সেখানে ছিল বলে জানায় মুহসিন। তবে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম মুর্শেদ এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা ডিবি অফিসে গিয়েছিলাম, তারা কিছুই জানাতে পারেনি। আমাদের বলা হয়েছিল, আটক করা হয়ে থাকলে তার পরিবারকে জানানো হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার পরিবারকে জানানো হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি। তাদের কাছে যদি কোনো তথ্য-প্রমাণ থেকে থাকে, জিজ্ঞাসাবাদ করে, তাহলে ভিন্ন বিষয়। অন্য কোনো অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখবে। কিন্তু আমাদের নিরীহ কোনো শিক্ষার্থী যেন হয়রানির শিকার না হয়, সেটাই আমাদের বক্তব্য।

এদিকে, আশিকুর রহমানের দ্রুত সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানিয়ে গতকাল বিকালে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে আশিকুরের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার এই সন্তান কোনো অন্যায় বা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না।

অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান বলেন, গতকাল ওকে যখন নিয়ে গেল, তখন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা তুহিন একটা নাম্বার দিয়ে যান। সেই নাম্বারে আজকে আমরা কল করলাম, তিনি বলেছেন তিনি নাকি এখানে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। এখানে স্পষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। সে (আশিক) দোষী হলে অবশ্যই তার তদন্ত হবে। কিন্তু সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে তা আমরা জানতে চাই।

সর্বশেষ খবর