পিঁয়াজু, চপ, বেগুনি, ছোলাসহ গতানুগতিক পণ্যেই ইফতারি সম্পন্ন হয় বরিশালের বেশির ভাগ মানুষের। বিত্তশালীদের জন্য রয়েছে তারকা হোটেলের বাহারি নামের ইফতার। এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষের কোনো পছন্দ-অপছন্দ নেই। পান্তা ভাত থেকে শুরু করে চিড়া, ছোলা-মুড়ি হলেই ইফতার হয়ে যায় তাদের। রমজান এলেই ইফতার বাজার ঘিরে আলাদা উন্মাদনার সৃষ্টি হয় বরিশালে। এবারও ব্যতিক্রম নয়। রাস্তার একাংশ, ফুটপাথ এবং দোকানের সামনের খোলা জায়গায় নানা ধরনের ইফতারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। বিকাল ৩টার পর থেকে ৫টা পর্যন্ত জমজমাট থাকে ইফতারির বাজার। বিত্তবানদের ইফতার বাজারে বিক্রি শেষ হয় আরও আগে। নামিদামি দোকানে আস্ত চিকেন ফ্রাই ৬০০, খাসির লেগ ৮০০, কালো ভুনার কেজি ১ হাজার, শাহি জিলাপি ২০০, হালিম ২৬০ থেকে ৩০০ এবং ৩০ থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে ফিরনি। এ ছাড়া চিকেন চপ ১৫, চিকেন পুলি ১৫ টাকাসহ অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই।
ফুটপাথের দোকানে পিঁয়াজু, ডিমচপ, বেগুনি, আলুর চপ ও পটোলের চপ পাওয়া যায় ৫ থেকে ১০ টাকায়।
আস্ত ডিমের চপ ২০, ভেজিট্যাবল রোল ২০, চিংড়ি ফ্রাই ১৫০, হালিম ২০০, শাহি জিলাপি ১৩০, চিকেন ফ্রাই ৫০ ও বোরহানি ৮০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। তৃণমূল ইফতারির দোকানে ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, চপ আর মুড়িই ভরসা।
ইফতারি ক্রেতা আবুল বাশার বলেন, ‘কিছু ইফতারি পণ্যের দাম বেড়েছে। আবার কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও পণ্য সাইজে ছোট করা হয়েছে।’
ইমাম হোসেন নামে এক মুসল্লি বলেন, ‘দিন দিন ইফতারি পণ্যের মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। আর পণ্যের গুণগতমানও কমে গেছে। এগুলো দেখার কেউ নেই।’
তবে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) সুব্রত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে ইফতারির বাজার নজরদারি করার জন্য প্রতিদিন বিকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন। বুধবারও তিনটি রেস্তোরাঁ থেকে মোটা অঙ্কের জরিমানা হয়েছে। ইফতারির বাজারে ভেজাল কিংবা অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে সামর্থ্যহীন মুসল্লিরা পান্তা ভাত থেকে শুরু করে চিড়া, মুড়ি, গুড়ের শরবত দিয়েও ইফতারি করেন। অন্যদিকে বরিশালের বিভিন্ন মসজিদে প্রতি বছরের মতো এবারও স্থানীয়দের দানে ইফতার পার্টি কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাসিন্দা ছাড়াও অসহায়, দুস্থ, পথচারী ও আশপাশের দোকানিরা অংশগ্রণ করেন।