শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

মামলার গ্যাঁড়াকলে চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম ওয়াসার পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের কাজটি আইনি গ্যাঁড়াকলে পড়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত এক মামলায় আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর আগে গত দুই মাস আগে ‘অধিগ্রহণ না হওয়া হালিশহরের কৃষিজমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির’ সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ এনামুল হক মুনিরী আদালতে একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ নুসরাত জাহান গত বুধবার এ আদেশ দেন। বাদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আফরোজা আকতার বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদের জবাব না দেওয়া পর্যন্ত প্রকল্পের কাজে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সেই পর্যন্ত কোনো কাজ করতে পারবে না ওয়াসা। তিনি বলেন, অধিগ্রহণ হয়েছিল ১৯৬২-৬৩ সালে। এরপর একবার ‘ডিরিকুইজিশন’ হয়েছিল। কিন্তু জমি ফেরত দেওয়া হয়নি। পরে ভূমি মালিকরা হাই কোর্টে রিট করেন ২০১৪ সালে। ওই রিটের আদেশে হাই কোর্টে বলেছিল, এ অধিগ্রহণ যথাযথ হয়নি। তখন হাই কোর্টে বাদীর পক্ষে রায় হয়। তবু জমিগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এরপর বাদী ভূমি মন্ত্রণালয়ে যান।

২০১৮ সালে মন্ত্রণালয় ডিরিকুইজিশন অর্ডার এবং হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে বলেছিল। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরপর যেহেতু স্যুয়ারেজ প্রকল্প শুরু হয়ে যায়, তাই ২০২০ সালে মামলা করা হয়।

অধিগ্রহণ না হওয়া হালিশহরের কৃষিজমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ এনামুল হক মুনিরী বলেন, আদেশের বিরুদ্ধে ওয়াসা লিভ টু আপিল করেছিল। তাতেও হাই কোর্টের আদেশ বহাল রাখা হয়। কিন্তু অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না করেই স্যুয়ারেজ প্রকল্প শুরু করায় আমরা মামলা করি। তিনি বলেন, আমরা জমি ফেরত চাই। আর যদি সরকারি প্রকল্পের প্রয়োজনে জমি দিতে হয়, ভূমি মালিকরা তা দেবে। তবে সেজন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

জান যায়, ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চট্টগ্রাম নগরীর ড্রেনেজ ও স্যানিটেশন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। মহাপরিকল্পনায় পুরো নগরীকে ছয়টি জোনে ভাগ করে ছয়টি পয়ঃশোধনাগার এবং দুটি ফিকাল স্ল্যাজ শোধনাগার স্থাপনের সুপারিশ করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার তায়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ পায়। জানুয়ারি মাসে তাদের সঙ্গে চুক্তি করে ওয়াসা। এপ্রিলে প্রকল্প এলাকায় মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে সরকার দিচ্ছে ৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা এবং ওয়াসা ৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য এবং ৩০০ ঘনমিটার ফিকাল স্ল্যাজ পরিশোধন সম্ভব হবে। যা নগরীর মোট পয়ঃবর্জ্যরে ২০ শতাংশ এবং ফিকাল স্ল্যাজের ৪১ শতাংশ। পরে আরও পাঁচটি ধাপে পুরো নগরী পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আসবে।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর