বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
জেলা পরিষদ টানছে না

সিলেটে সবার মনোযোগ সংসদে

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

সিলেটে সবার মনোযোগ সংসদে

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আসীন হওয়ার জন্য একসময় আওয়ামী লীগের অনেক নেতার আগ্রহ ছিল তীব্র। এবার সে আগ্রহে ভাটা পড়েছে। জেলা পরিষদের আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো নেতারই তেমন আগ্রহ নেই। এখন সিলেট আওয়ামী লীগের শীর্ষ সব নেতাই মেয়র বা জাতীয় সংসদ সদস্য হতে চান। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা সমমর্যাদার প্রশাসকের চেয়ারে বসবার ব্যাকুলতা কারও নেই। তবে কেউ কেউ পুরো বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছেন দলের সভানেত্রীর ওপর। ‘নেত্রী দায়িত্ব দিলে না করি কীভাবে’ ধরনের মনোভাব নিয়ে বসে আছেন অনেকে। ১৭ এপ্রিল দেশের ৬১ জেলা পরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করে প্রশাসক নিয়োগের আগ পর্যন্ত প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পরিচালনার জন্য পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদটি অবশ্য এর অনেক আগ থেকেই শূন্য। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর নির্বাচিত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমানের মৃত্যুতে পদটি শূন্য হয়। লুৎফুর রহমানের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান বা প্রশাসক হতে আগ্রহী ছিলেন অনেক নেতা। কিন্তু ওই সময় নির্বাচন না হওয়ায় এখন আর সে আগ্রহ নেই তাঁদের। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কেউই জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি নির্বাচনের এখনো প্রায় দেড় বছর বাকি। তাই এখন থেকেই দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। ফলে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ নিয়ে কারোরই আগ্রহ নেই। এর আগে বিভিন্ন সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রত্যাশী হিসেবে যাঁদের নাম আলোচিত হয়েছিল তাঁর মধ্যে ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদসহ অর্ধডজনের বেশি নেতা। কিন্তু জাতীয় সংসদ ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এখন কেউই আর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে বা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনে আগ্রহী নন।

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আগামী সিটি নির্বাচনে মেয়র অথবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। সেই লক্ষ্যে তিনি কাজও করে যাচ্ছেন। শফিকুর রহমান চৌধুরী ছিলেন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য। মহাজোটের আসন ভাগাভাগির ফলে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর আসনটি ছেড়ে দিতে হয় জাতীয় পার্টিকে। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। তবে মাঠ ছাড়েননি শফিক চৌধুরী। সংসদ সদস্য না হয়েও তিনি গেল ১০ বছর তাঁর নির্বাচনী এলাকায় দিনরাত কাজ করে গেছেন। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সাজানো গোছানো অবস্থান ছেড়ে তিনিও আগ্রহী নন জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে। তবে শফিক চৌধুরী মনে করেন, দলের সভানেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি তাঁকে যেখানে রাখতে চাইবেন সেখানেই কাজ করবেন। ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার চেয়ে নেত্রীর সিদ্ধান্ত ও দলীয় স্বার্থই বড়- এমন মন্তব্য শফিক চৌধুরীর। নাসির উদ্দিন খানও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চান সিলেট-৬ আসনে। আর মাসুক উদ্দিন আহমদও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শফিকুর রহমান চৌধুরীর মতো নিজের আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টিকে।

আগামী সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে তিনিও এলাকায় সরব।

তবে দলীয় সূত্র জানিয়েছেন, আলোচিত এই নেতাদের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম এমন নেতাদের মধ্য থেকে কাউকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন বা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য নেতাদের বিভিন্ন তথ্যও সংগ্রহ শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর