শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

অবহেলিত জেনারেল হাসপাতাল এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সরকারি পর্যায়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু এটি ছিল অবহেলিত। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকতেন ১২০ থেকে ১৪০ জন। জনবল ও চিকিৎসা উপকরণ সংকটে রোগীরা বঞ্চিত হতেন সেবা থেকে। তবে ২০২০ সালের মার্চে কভিড সংক্রমণ শুরুর পর এটিকে চট্টগ্রামের একমাত্র ‘ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দুই বছরের ব্যবধানে হাসপাতালটি এখন চট্টগ্রামে স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। পর্যায়ক্রমে যোগ হয়েছে নানা স্বাস্থ্যসেবা ও সেবা উপকরণ। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, করোনার প্রকোপ শুরুর পরই বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপন করা হয় সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট। নানা উদ্যোগে সংস্থান হয় প্রায় ৩০টি হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলা (এর মধ্যে কিছু নষ্ট হয়ে যায়)। পর্যায়ক্রমে বসানো হয় ১৮ আইসিইউ এবং ছয়টি এইচডিইউ শয্যা। সরকারি উদ্যোগে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় অত্যাধুনিক ওয়াশিং প্লান্ট। সর্বশেষ গত রবিবার সংযোজন হয় বাতাস থেকে মিনিটে ৫০০ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন সম্পন্ন ‘জেনারেটর অক্সিজেন প্লান্ট’। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, একসময় হাসপাতালটিতে রোগীর সংখ্যা কম ছিল।

করোনা সংক্রমণ শুরুর পর এটি চট্টগ্রামের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় আলো হয়ে আসে। ইতোমধ্যেই জনবল বৃদ্ধি, আধুনিক ও জরুরি চিকিৎসা উপকরণ সংযোজন এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনসহ নানাভাবে এটি এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ হাসপাতাল। আগামীতে আরও কিছু সংযোজন হবে। সিসিইউ ও ডায়ালাইসিস বিভাগ চালু, ১০ তলা বিশিষ্ট মাল্টিপারপাস ভবন ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস অনুমোদন পর্যায়ে। এর মধ্যে কিছু কাজ জুনের মধ্যে শুরু হবে। আমরা চাই এটি হোক চট্টগ্রামের দ্বিতীয় রেফারেল হাসপাতাল। 

হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা শওকত আল আমিন বলেন, নতুন নতুন চিকিৎসা সরঞ্জাম সংযোজনে জেনারেল হাসপাতাল এখন স্বাস্থ্যসেবায় নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি চালু হয়েছে ইকোকার্ডিওগ্রাফি মেশিন ও আধুনিক প্রযুক্তির এক্স-রে। যোগ হচ্ছে নতুন লিফট। চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের নানা কাজ। সেবা বৃদ্ধির কারণে এখন রোগীও বাড়ছে। অতীতের তুলনায় এটি এখন স্বাস্থ্যসেবায় অনেক বেশি ভূমিকা রাখছে।

জানা যায়, ১৯০১ সালে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি অনেকটা খুঁড়িয়েই চলছিল। সংকটই ছিল সঙ্গী। ২০১০  সালে এটি ১৫০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবলসহ সামগ্রিক অবকাঠামো ছিল আগের অবস্থায়। ফলে চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ শুরুর পর এটি ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কার্যত এরপর থেকেই এখানে নানা সুবিধা যুক্ত করা হয়। বর্তমানে এটি চট্টগ্রামের দ্বিতীয় স্বয়ংসম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ খবর