রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইমেজ পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ

জেলা পরিষদ নির্বাচনে জয় পেতে একাট্টা নেতা-কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

ইমেজ পুনরুদ্ধারে আওয়ামী লীগ

খুলনায় সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় কোন্দলে বড় খেসারত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পরাজিত হলে ইমেজ সংকট দেখা দেয়। শীর্ষ নেতারা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিজয়ী করে হারানো ইমেজ ফেরাতে চায় আওয়ামী লীগ। সেই সঙ্গে দলে শৃঙ্খলা ও ঐক্য ফেরাতে মহানগরী ও জেলা পর্যায়ে একাধিক যৌথ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়েছে।

জানা যায়, খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ হারুনুর রশীদ মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাজনীতিতে প্রবীণ এই নেতা একই সঙ্গে জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ক্রীড়া সংগঠক এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারা চশমা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও হুইপ মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই। এ ছাড়া বিএমএ জেলা সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগে সাবেক যুগ্মসম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন। তিনিও সাবেক হুইপ মোস্তফা রশিদী সুজার অনুসারী। মোস্তফা রশিদী সুজা ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। শেখ হারুনুর রশীদের বিপক্ষে মোর্ত্তজা রশিদী দারা ও ডা. শেখ বাহারুল আলম প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের পুরনো বিরোধ ফের আলোচনায় এসেছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতারা চেষ্টা করেও জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে দলের চেন অব কমান্ড ও তৃণমূলের ঐক্য আবারও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এসব কারণে জাতীয় সংসদ ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের ঐক্য প্রমাণে সক্রিয় হয়েছেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খুলনায় মাঠ গোছাতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। তৃণমূলের কমিটি গঠনের পাশাপাশি দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংগঠনিক শক্তি বাড়াতে যৌথ বর্ধিত সভার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভা করা হবে।

এসব সভায় জেলা ও মহানগরী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়র কাউন্সিলর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, সহযোগী সংগঠনের জেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত থাকবেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে তৃণমূলে ঐক্যবদ্ধ শক্তি গড়ে তোলা হবে। খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য নতুন সদস্য পদ দেওয়া হবে। এ ছাড়া জেলার ৬১২ ওয়ার্ডে ২০০ করে সদস্য পদ নবায়ন করা হবে। জাতীয় কাউন্সিলের আগে সদস্য সংগ্রহে নামবে দলের ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখা। তবে মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, অবৈধ অস্ত্রধারী, সাজাপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সন্তানরা দলে সদস্য পদ পাবে না।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তরুণরা আওয়ামী লীগের দর্শনে সম্পৃক্ত হতে চায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় বাধা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃত্বের বিশৃঙ্খলা। এ অবস্থায় দলের ঐক্য ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর