বরিশাল মহানগর বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে। নগর কমিটির একাধিক যুগ্ম আহ্বায়ক ও টিম লিডারের অভিযোগ : ভার্চুয়াল সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা ওয়ার্ড কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে মানা হয়নি। দলীয় নেতাদের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে জবাব দিলে চেয়ারম্যানকেই দেবেন বলে জানিয়েছেন মহানগর কমিটির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির।
গত বছর ৩ নভেম্বর মনিরুজ্জামান ফারুককে আহ্বায়ক ও মীর জাহিদুল কবিরকে সদস্য সচিব করে গঠিত তিন সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গত ২২ জানুয়ারি ৪২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি হিসেবে অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ১১ মার্চ নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করে তারা। ৩০ ওয়ার্ডে কমিটি গঠনে মহানগরীর বিএনপির ৬ যুগ্ম আহ্বায়ক ও একজন সদস্যকে প্রধান করে সাতটি সাংগঠনিক টিম গঠন করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে। প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার রাতে ৬টি ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় মহানগর কমিটি।
আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের কমিটি অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের স্বাক্ষর নেই।
অভিযোগ উঠেছে : ১১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সচিব রানা পাল মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সচিব মঞ্জুর মোর্শেদ মাহাবুব জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সচিব রেজাউল ইসলাম রেজা মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আহ্বয়ক মতিউর রহমান মিঠু মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ও সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান তারেক মহানগর যুবদলের কোষাধ্যক্ষ। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সচিব জিয়াউল হাসান দুলালও মহানগর যুবদলের পদধারী নেতা।
৬টি ওয়ার্ড কমিটি অনুমোদনে স্বাক্ষর না দেওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল।
ঘোষিত ওয়ার্ড কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব অনেককে চেনেন না বলে দাবি করেছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন। কাউন্সিলে বেশি ভোট পাওয়ার জন্য মহানগরীর শীর্ষ দুই নেতা ত্যাগীদের উপেক্ষা করে তাদের নিজস্ব অনুসারীদের নিয়ে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও টিম লিডার হাবিবুর রহমান টিপু বলেন, তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওয়ার্ডে কমিটি গঠনে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা মানা হয়নি।
শুক্রবার রাতে কমিটি ঘোষিত দুটি ওয়ার্ডের টিম লিডার মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কে এম শহীদুল্লাহ শহিদ বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনে কর্মীর ত্যাগ কিংবা দলের জন্য বিগত দিনের অবদান বিবেচনা করার সময় পাওয়া যায়নি। মহানগর আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই ওয়ার্ড কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও টিম লিডার জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়াল সভায় স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন- অঙ্গ সংগঠনের কাউকে ওয়ার্ডের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা যাবে না। ক্ষেত্রবিশেষে সদস্য করা যেতে পারে। বিশেষ প্রয়োজনে ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক করা যেতে পারে। শুক্রবার ঘোষিত ৬টি ওয়ার্ড কমিটির প্রতিটিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই নির্দেশনা উপেক্ষা করা হয়েছে। টিম লিডারদের প্রস্তাবিত কমিটি বাদ দিয়ে বা প্রস্তাবে নাম নেই এমন নেতাদের আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ পদ দেওয়া হলে টিম লিডারদের কাজের প্রয়োজনীয়তা কী- প্রশ্ন রাখেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির মুঠোফোনে বলেন, সাবেক ছাত্রনেতা এবং অঙ্গ সংগঠনের পদ থেকে ইতিপূর্বে যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের ওয়ার্ডের আহ্বায়ক কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।