বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

বৃদ্ধাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের গুরুদাসপুরে অপবাদ দিয়ে কুলসুম বেওয়া নামে এক বৃদ্ধাকে দড়ি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল দুপুরে ওই বৃদ্ধাকে আদালতে বিচারকের সামনে হাজির করা হয়। ভুক্তভোগী কুলসুম একই এলাকার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী। ভুক্তভোগী বৃদ্ধা জানান, তার স্বামী অনেক দিন আগে মারা গেছেন। তার চার মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। মেজো মেয়ে রফেলা বিয়ের পর থেকেই তার স্বামীকে নিয়ে এই বাড়িতে  থাকে। মঙ্গলবার হঠাৎ অসুস্থ পড়লে বৃদ্ধার মেয়েজামাই আবুল কাশেম ওষুধ কিনে এনে তার ঘরে প্রবেশ করেন। এর পরপরই রতন ও উজ্জ্বল নামে প্রতিবেশী দুই যুবক হইচই করতে থাকে। তারা লোকজন জড়ো করে অপবাদ দেয় যে, বৃদ্ধা তার মেয়েজামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন। এ কথা বলার পরই তারা তাকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে নারিকেল গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং তাকে ও তার জামাইকে মারধর করে।

পরে পুলিশকে তারাই সংবাদ দেয়। পুলিশ এসে তাকেসহ তার জামাইকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ভিকটিমের দুই মেয়ে রফেলা বেগম ও সফুরা বেগম বলেন, তাদের মায়ের জ্বর। তারা বনপাড়ায় ক্লিনিকে থাকায় তার জামাই ওষুধ এনে শাশুড়িকে ডেকে ওষুধ খেতে বলেন। এ সময় রতন ও উজ্জ্বল তাদের গাছে বেঁধে মারপিট করে পুলিশ ডেকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ভিকটিমের আইনজীবী মোক্তার হোসেন বলেন, কুলসুম বেওয়া ও তার জামাতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকৃতপক্ষে এই মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পর তাদের সম্পত্তি ছিনিয়ে নিতে স্থানীয় লোকজন এ অভিযোগ এনেছে।

এ ব্যাপারে জেলা মানবাধিকার সংস্থার সভাপতি সোহেল রানা বলেন, কেউ অপরাধ করলে সে জন্য আদালত আছে, আইন আছে। কিন্তু তাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তারা ভিকটিমের পাশে থাকবেন এবং যা করণীয় তা করবেন।

এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মতিন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বৃদ্ধা ও তার মেয়ের স্বামীকে আটক করে তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর