পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে সিলেটে ৪৮ ঘণ্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘট পালিত হয়েছে। গত সোমবার ভোর থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার এ ধর্মঘটের ডাক দেয় সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ধর্মঘটের ফলে সোমবারের মতো গতকালও সিলেট জেলায় কোনো ট্রাক, ট্যাংক-লরি, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানসহ কোনো পণ্যবাহী যান চলাচল করতে দেননি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা-কর্মীরা। মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে তারা পিকেটিং করার কারণে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শত শত পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যান আটকা পড়ে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারে। মহানগরের সোবহানীঘাটস্থ সবজির পাইকারি বাজার থেকে জেলার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিদিন সকালে যায় সবজি। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে পাইকারি বাজারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি নিয়ে সোবহানীঘাটে আসতে পারেনি কোনো পণ্যবাহী গাড়ি। তবে গভীর রাতে হাতেগোনা কয়েকটি ট্রাক আসে বাজারে। ফলে গত দুই দিন সবজি ও অনেক নিত্যপণ্য বিক্রি হয় চড়া দামে। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাটও গত দুদিন ছিল নীরব। ছিল না পণ্যবাহী যানের আনাগোনা। ফলে ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততাও ছিল না। ক্রেতাদের উপস্থিতিও কম দেখা যায় এ দুই দিন।
গতকাল সন্ধ্যায় মহানগরের বন্দরবাজারে সবজি কিনতে আসা চারাদিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা ফিরোজ মিয়া বলেন, সিলেটের পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে গেছেন। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে কথায় কথায় তারা ধর্মঘট ডাকেন। এদের জন্য কি আইন নেই? এই ধর্মঘটের কারণে গত পরশু ৬০ টাকা কেজিতে কেনা চিচিঙ্গা আজ কিনতে হচ্ছে ৮০ টাকায়। এভাবে প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা।
সিলেটের পণ্যবাহী পরিবহন শ্রমিক নেতারা জানান, সিলেটের পাথর দিয়ে সারা দেশে নির্মাণকাজ চলে। ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং ও লোভাছড়া কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলনে সংশ্লিষ্ট প্রায় ১৫ লাখ ব্যবসায়ী, শ্রমিক এবং পরিবহন শ্রমিক ও মালিক জড়িত। কিন্তু প্রায় পাঁচ বছর ধরে কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকায় পরিবহন খাতের মালিক-শ্রমিকরা চরম দুঃসময়ে পড়েছেন। কোয়ারিগুলো বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে লিখিতভাবে আবেদন করলেও কেউ ভ্রুক্ষেপ করছে না। তাই বাধ্য হয়ে পণ্যবাহী পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকেন। তবে গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় ট্রাক, পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের বৈঠকে এ ধর্মঘট স্থগিত করা হয়। অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষা বিবেচনায় পরিষদ নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন।