বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থী পাচ্ছে না গ্রামের কলেজ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও খুলনা

শিক্ষার্থী পাচ্ছে না গ্রামের কলেজ

এমপিওভুক্ত ‘অপ্রয়োজনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান’ নিয়ে বিপাকে পড়েছে যশোর শিক্ষা বোর্ড। আসনসংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী না থাকা, মানসম্মত শিক্ষার অভাব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের কারণে বেশ কয়েকটি কলেজকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। শিক্ষার্থী সন্তোষজনক না হলে প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করা হবে বলে সতর্ক করা হচ্ছে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বলছেন, সরকারি কলেজমুখীর প্রবণতা রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এ ছাড়া বোর্ডের অনুমতি পাওয়া শিক্ষার্থীরাই শুধু এখানে ভর্তির সুযোগ পায়। ফলে আসনসংখ্যা অনুযায়ী অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করারও সুযোগ নেই। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণে অতিরিক্ত ব্যয়, পিছিয়ে থাকা র‌্যাঙ্কিং, ওয়ানম্যান ডিপার্টমেন্ট (বিষয়ভিত্তিক একজন শিক্ষক), সুযোগ-সুবিধার সীমাবদ্ধতায় শিক্ষার্থী পাচ্ছে না গ্রামের কলেজগুলো। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, খুলনা অঞ্চলের তথ্য অনুযায়ী জেলায় এমপিওভুক্ত কলেজ রয়েছে ৭২টি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২০টি রয়েছে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আসনসংখ্যা অনুযায়ী শিক্ষার্থী না থাকায় রূপসা চাঁদপুর কলেজ, ডুমুরিয়া রংপুর কলেজ, চালনা মহিলা কলেজ, খগেন্দ্রনাথ মহিলা কলেজ, পাইকগাছা কালিনগর কলেজ, মহেশ্বরপাশা শহীদ জিয়া (ডিগ্রি) কলেজ, খুলনা কলেজ, পল্লীশ্রী কলেজসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, এসব কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত- এতদিন সে বিষয়টি প্রকাশ্যে না এলেও এবার অনলাইনে ভর্তি কার্যক্রম চালু হওয়ায় তা স্পষ্ট হয়েছে। বিগত বছরে এমন কলেজও ছিল, যেখানে অনলাইন আবেদনে মাত্র চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে রেখেছে।

এদিকে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালা অনুযায়ী আজ থেকে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (www.xiclassadmission. gov.bd) ভর্তির আবেদন করতে পারবেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। আবেদন চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৩১ ডিসেম্বর প্রথম দফায় ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একাদশে ক্লাস শুরু হবে। নীতিমালায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। এ ফি দিয়ে সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দ দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবেন তার মধ্য থেকে তার মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার আসন নির্ধারণ করা হবে। নির্বাচিত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে ৩২৮ টাকা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন করতে হবে। ১৮ থেকে ২২ ডিসেম্বর প্রথম ধাপের আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে ৩১ ডিসেম্বর প্রথম পর্যায়ে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কলেজ নিশ্চায়ন চলবে ১ থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

৯ ও ১০ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে। ১২ জানুয়ারি এর ফল প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নেওয়া হবে ১৬ জানুয়ারি। ১৮ জানুয়ারি শেষ ধাপের ফল প্রকাশ করা হবে।

তথ্যমতে, ২২ থেকে ২৬ জানুয়ারি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলবে। ১ ফেব্রুয়ারি একাদশে ক্লাস শুরু হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, বোর্ডের পূর্বানুমতি ছাড়া নির্ধারিত আসনের অতিরিক্ত কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সেশনচার্জ ও ভর্তি ফি বাবদ সর্বোচ্চ ৫ হাজার, ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার, জেলায় সর্বোচ্চ ২ হাজার ও উপজেলা-মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা নিতে পারবে।

নন এমপিওভুক্ত বা আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা মাধ্যমে সেশনচার্জ ও ভর্তি ফি বাবদ সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫০০, ইংরেজি ভার্সনে ৮ হাজার ৫০০; অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় বাংলা মাধ্যমে ৫ হাজার, ইংরেজি ভার্সনে ৬ হাজার; জেলায় বাংলা মাধ্যমে ৩ হাজার, ইংরেজি ভার্সনে ৪ হাজার; উপজেলা-মফস্বল এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা মাধ্যমে ২ হাজার ৫০০ ও ইংরেজি ভার্সনে ৩ হাজার টাকা আদায় করা যাবে।

এ ছাড়া সরকারি কলেজগুলো সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ফি আদায় করবে। ভর্তিচ্ছুদের কাছে নীতিমালা অনুমোদিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত কোনো অর্থ আদায় করা যাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর