শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকদের ওপর নতুন খড়গ

নলকূপে পানি তুলতেও গুনতে হবে টাকা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরে গভীর নলকূপ স্থাপনে ওয়াসার অনুমোদন নেওয়ার বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে এ অনুমোদন নিতে হয়। নতুন বিধানে একই সঙ্গে গ্রাহকদের পানি উত্তোলনেও প্রতি মাসে গুনতে হবে টাকা। এ বিধান আবাসিক ও বাণিজ্যিক  উভয় ক্ষেত্রেই। ওয়াসা বোর্ডের ৭১তম সাধারণ সভায় গভীর নলকূপের পানির মূল্য নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১ মার্চ থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন-১৯৯৬-এর ২৪-এর উপধারা-২ অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ গভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলনে ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রাহকরা মনে করছেন, বর্ধিত মূল্যের এই সময়ে এটা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতোই। তাদের মতে, অনুমোদনের সময় একবার ফি প্রদান আবার প্রতি মাসে ফি দেওয়ার বিষয়টি অযৌক্তিক। এটি গ্রাহকদের ওপর নতুন খড়গ।  জানা যায়, বর্তমানে নগরে ওয়াসার অনুমোদিত গভীর নলকূপ আছে ৪ হাজার ৩০০টি। এর মধ্যে আবাসিক ৯০ শতাংশ, প্রায় ৩ হাজার ৮৭০টি এবং বাণিজ্যিক ১০ শতাংশ, প্রায় ৪৩০টি। গভীর নলকূপ থেকে উত্তোলিত পানির প্রস্তাবিত মূল্য আবাসিকের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট ৬ টাকা এবং বাণিজ্যিকের জন্য প্রতি ইউনিট ১২ টাকা ৩৪ পয়সা। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘নলকূপ স্থাপনে অনুমোদনের সময় একবার ফি, প্রতি বছর নবায়নের সময় একবার ফি, সঙ্গে আছে পানি তুলতে বিদ্যুৎ খরচ। এখন আবার প্রতি মাসে ফি নির্ধারণ করলে তা গ্রাহকদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হবে। এমনিতেই বাজার ঊর্ধ্বমূল্যের কবলে পড়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। তার ওপর আবার মাসে মাসে ফি। এটা অযৌক্তিক।            

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, গভীর নলকূপের পানির ওপর ফি ঢাকা সিটি করপোরেশনে আগে থেকেই আছে। চট্টগ্রামে নতুন যোগ হচ্ছে। এর মাধ্যমে গ্রাহক সেবা বাড়বে। ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) মো. ছামছুল আলম বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনে সবাইকে নিরুৎসাহিত করতে গভীর নলকূপের পানিতে ফি বসানো হচ্ছে। যাতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কমে না যায়। নলকূপে মিটার লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সাইজের গভীর নলকূপ স্থাপনে আবাসিকের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি ৩০ হাজার ও অনাবাসিকে ৫৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাসিকের নবায়ন ফি ১৫ হাজার ও অনাবাসিকে ৩৩ হাজার ৭৫০ টাকা।

৪ ইঞ্চির নলকূপ স্থাপনে আবাসিকের লাইসেন্স ফি ৫০ হাজার এবং অনাবাসিকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে আবাসিকের নবায়ন ফি ২৫ হাজার ও অনাবাসিকে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। ৬ ইঞ্চি সাইজের নলকূপ স্থাপনে লাইসেন্স ফি আবাসিকের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা এবং অনাবাসিকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে নবায়ন ফি আবাসিকের ৭৫ হাজার এবং অনাবাসিকের ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসার আবাসিক গ্রাহক ৭৮ হাজার ৫৪২ এবং বাণিজ্যিক গ্রাহক ৭ হাজার ৭৬৭ জন। পানির দৈনিক উৎপাদন ৪৫ থেকে ৫০ কোটি লিটার। চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক সরবরাহকৃত প্রতি ইউনিট পানির মূল্য আবাসিকে ১৮ টাকা এবং অনাবাসিকে ৩৭ টাকা।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর