বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা

কাল ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু

আফজাল হোসেন, টঙ্গী

আগামীকাল ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমা। রাজধানীর সন্নিকটে টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদের তীরে শুরু হবে বিশ্ব মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় এ মহাসম্মেলনের প্রথম পর্ব। এ পর্বে মাওলানা যোবায়ের সমর্থিত মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করবেন। দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সা’দ অনুসারীরা ইজতেমায় অংশ নিবেন। আগামী ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এরপর ৪দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব এবং ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার উভয়পর্ব। এদিকে, বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি রাজ্য থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি আসছেন আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে। গতকাল থেকেই বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা ময়দানে প্রবেশ করে জেলাওয়ারী নিজ নিজ খিত্তায় অবস্থান শুরু করেন।

এবার জেলাওয়ারী মুসল্লিরা ৯১টি খিত্তায় অবস্থান করবেন। আগত মুসল্লিরা ময়দানের বাইরে তুরাগ নদের পশ্চিমপাশে বেশ কিছু খিত্তা রয়েছে, সেখানেও অবস্থান নিবেন।

গতকাল ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে তিনি ময়দান প্রাঙ্গণে পুলিশের এক ব্রিফিং অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা পরিকল্পনা বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করেন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেন, আগত মুসল্লিদের সেবায় প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুইটি গভীর নলকূপ উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে গতকাল সন্ধ্যায় ১৮টি আধুনিক হসপিটাল বেড উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে। এখানে দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা সেবা নিতে পারবেন। এছাড়া আহসান উল্লাহ মাস্টার ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে ১৮টি আধুনিক হসপিটাল বেড উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।

টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল লতিফ বলেন, আগত মুসল্লিদের সেবায় সমিতির উদ্যোগে প্রতিবারের ন্যায় এবারও প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হবে। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সেবায় ২৪ ঘন্টা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

পুলিশের ব্রিফিং : পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ময়দানে খিত্তাভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখানে সাদা পোশাক, পোশাকে পুলিশ র‌্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ সবাই সমন্বয়ের মাধ্যমে মুসল্লিদের সেবা প্রদান করবে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ১৪টি কন্ট্রোল রুম, সিসি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম, আকাশ পথে হেলিকপ্টার দিয়ে মনিটরিং, মোবাইল, ফুট প্যাট্রোল, নৌ-টহল টিম থাকবে। মুসল্লিদের কোনো সম্যসা হলে যে কোনো মুহূর্তে ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশি সেবা পাবেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত আইজিপি (অপারেশন) আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি (স্পেশাল ব্রাঞ্চ) মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি(ট্যুরিস্ট পুলিশ) মো. হাবিবুর রহমান, জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম, ডিসি (ক্রাইম) ইলতুৎ মিস. ডিসি মাহাবুবুজ্জামান প্রমুখ।

ভারতের রাজ্যের মুসল্লি আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে আসছে : আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বেলাল জানান, মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি রাজ্যে থেকে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি আসছেন আখাউড়া চেকপোস্ট দিয়ে। গত ২৬ নভেম্বরের থেকে গতকাল পর্যন্ত ২২০ জন ভারতীয় মেহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। ভারতীয় মুসল্লিরা আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে বাস কিংবা আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে ট্রেনযোগে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে যাচ্ছেন। আখাউড়া স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানায়, বিদেশি মেহমানদের অভ্যর্থনা জানানো, থাকা-খাওয়া ও ঢাকায় পাঠানোসহ সব কাজ দ্রুত করার জন্য তাবলিগ জামায়াতের ঢাকার কাকরাইল মসজিদ থেকে একটি প্রতিনিধি দল আখাউড়া স্থলবন্দরে অবস্থান করছেন। তারা প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত আগত মুসল্লিদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন এলাকায় বিদেশি মেহমানদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর