রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে একজন শিক্ষকে

পতাকা টাঙানো, টয়লেট পরিষ্কার, ক্লাস নেওয়া সবই করতে হয় তাকে

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশালের হিজলা উপজেলার মেমানিয়া চরাঞ্চলের ৩ নম্বর ডিগ্রিচর আলাবক্স হাওলাদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ স্কুলে চালু রয়েছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি। ছয়টি শ্রেণির ক্লাস হয় দুই শিফটে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। মাঝে দুপুর ১২টায় দুই শিফটের শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চা ও জাতীয় সংগীত। স্কুল খোলা-আটকানো, টানা ছয়টি ক্লাস নেওয়া, জাতীয় পতাকা উত্তোলন-নামানো, টয়লেট, অফিস, তিনটি ক্লাসরুম ও চত্বর পরিষ্কার রাখা, সবকিছুই করতে হয় একমাত্র সহকারী শিক্ষক মনির হোসেনকে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও চার সহকারী শিক্ষকসহ মোট পাঁচটি পদ থাকলেও চারটি পদই শূন্য। এ কারণে সকালের শিফটে তিন শ্রেণির ছয়টি এবং বিকালের শিফটে তিন শ্রেণির ছয়টি ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওই বিদ্যালয়ের ১০৩ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী। এতে পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ে ঝরে পড়ার উপক্রম হয়েছে তারা।

জানা গেছে, প্রতিটি গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২০১৫ সালে ওই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এই স্কুলে প্রাক-প্রাথমিকে চার, প্রথম শ্রেণিতে ১০, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২২, তৃতীয় শ্রেণিতে ৩৩, চতুর্থ শ্রেণিতে ২০ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। আগে ওই স্কুলে ডেপুটেশনে আবুল কালাম নামে একজন সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তবে ডেপুটেশনের সব শিক্ষককে পূর্বের স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদানের সরকারি নির্দেশ দেওয়ায় তিনি ১৬ জানুয়ারি ওই স্কুল থেকে চলে যান। এরপর মনির হোসেনই ওই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক। মনির হোসেন বলেন, তিনি ২০২০ সালের ৩ মার্চ যোগদানের পর থেকেই দুই শিক্ষক দিয়ে স্কুলটি চলছিল। মাঝে মধ্যে এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের দিয়েও ক্লাস নেওয়া হতো। তবে তারা অনিয়মিত। তারা একদিন এলে তিন দিন আসে না।

স্কুলের জমিদাতা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির চৌকিদার বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই স্কুলটি খুঁড়িয়ে চলছে। ক্লাস না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসে না। এতে তারা ঝরে পড়ার উপক্রম হয়েছে। একজন দফতরিও নেই।

হিজলা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল গাফফার জানান, এই স্কুলসহ চরাঞ্চলে ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষকের শূন্য পদের তালিকা জেলা কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহনলাল দাস বলেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের ২৩ জানুয়ারির মধ্যে পদায়ন করা হবে। তখন সমস্যা কেটে যাবে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর