সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পূর্বাচলে পয়োবর্জ্য শোধনে ব্যক্তিগত এসটিপি বাধ্যতামূলক

হাসান ইমন

পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে পানি সরবরাহ এবং পয়োশোধন কার্যক্রম করবে না ঢাকা ওয়াসা। সে জন্য স্যুয়ারেজের দায়িত্বে থাকছে না সংস্থাটি। পুরো প্রকল্পে পানি সরবরাহ ও স্যুয়ারেজের দায়িত্বে থাকছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। পূর্বাচল এলাকায় পয়োবর্জ্য শোধনে বড় আকারে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ এখন হচ্ছে না। নিজ উদ্যোগেই ভবনপ্রতি ছোট স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নির্মাণ করতে হবে। আর এ এসটিপি নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পূর্বাচলে এখনো সেভাবে মানুষের আবাসন তৈরি হয়নি। এখন প্ল্যান দেওয়া শুরু করেছি। আর ইতোমধ্যে কিছু ভবন নির্মাণ হয়েছে। যেহেতু আবাসন তৈরি হয়নি, সে জন্য বিশাল ব্যয়ে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। এ জন্য ভবন মালিকদের নিজ উদ্যোগে ৭-৮ লাখ টাকা খরচ করে ছোট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করতে হবে। এ ছাড়া কেউ চাইলে সেপটিক ট্যাঙ্ক বা স্যুকওয়েল নির্মাণ করতে পারে। তবে এসটিপি, সেপটিক ট্যাঙ্ক ও স্যুকয়েলের মধ্যে যে কোনো একটি নির্মাণ বাধ্যতামূলক।’ রাজউক সূত্র জানায়, রাজধানীকে বিস্তৃত করতে শহরের পাশেই হাতে নেওয়া হয় ‘পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প’। এ প্রকল্পের ২৬ হাজার ২১৩টি আবাসিক প্লটের মধ্যে মাত্র ৩০০টির মালিক ভবনের নকশা অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন রাজউক থেকে। এসব প্লটের বেশির ভাগেরই ভবন নির্মাণকাজ হয়েছে বা হচ্ছে। বাকি প্লট মালিকরা এখনো নকশার অনুমোদন নেননি। তবে এর মধ্যে আদি নিবাসী কোটায় প্লট পাওয়া প্রায় ৫০০ মালিক পাকা-আধাপাকা একতলা বাড়ি করেছেন। একতলা বাড়ির জন্য রাজউকে নকশা অনুমোদন করাতে হয় না। ৭ হাজার নিবাসী এখানে প্লট পেয়েছেন। মূলত তাদের জায়গায়ই হচ্ছে পূর্বাচল নতুন শহর। প্রকল্প এলাকার ভিতরে চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় চালু রয়েছে।

প্রকল্প এলাকায় আগের ২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। সেগুলোর জন্য প্রকল্পে জায়গা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু স্কুলগুলো সেক্টর ধরে স্থানান্তর হয়নি। প্রকল্পে একটি সরকারি হাসপাতাল থাকার কথা। সেটির নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। সব মিলিয়ে ৩৫টি সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ, পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের অফিসের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা কেউ সেখানে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেনি। প্রতি সেক্টরে একটা করে বাজার থাকার কথা। এখনো কোনো বাজার তৈরি করা হয়নি। পূর্বাচলে সুযোগ-সুবিধা তৈরি না হওয়ায় আবাসন গড়ে ওঠেনি। সব শেষ গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর ২২তম সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পূর্বাচল নতুন শহরে ইউটিলিটি সার্ভিস হিসেবে ড্রেনেজ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও স্যুয়ারেজ নেটওয়ার্ক এবং সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন গত বছর ১ অক্টোবর পূর্বাচলে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দ্রুত স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন।

এ বিষয়ে রাজউকে চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পূর্বাচল নতুন শহরে পয়োনিষ্কাশনে ব্যক্তিগত স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নির্মাণ করতে হবে। প্রত্যেক ভবন মালিককে এ এসটিপি নির্মাণ করতে হবে এবং তা বাধ্যতামূলক। পূর্বাচলে এখন রাজউক যে প্ল্যান দিচ্ছে সেখানে এসটিপি নকশা দেখে অনুমতি দিচ্ছে। কারও এ নকশা ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই। আর আমাদের টিম সার্বক্ষণিক তদারক করবে। যেহেতু এটা পরিকল্পিত এলাকা সুতরাং কারও ব্যত্যয়ের সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, পয়োনিষ্কাশনে বড় স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। কিছুদিন পর পয়োনিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ লাইন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। আর এসটিপি নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা আছে। আবাসন তৈরি হয়ে গেলে পুরো এলাকাকে এসটিপির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর