শিরোনাম
রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

চোরাই পণ্য নিতে এসে আটক হোতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চোরাই গার্মেন্ট পণ্য বুঝে নিতে এসে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন চক্রের হোতা রিপন ওরফে ছোট রিপন (৪৩)। শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন লাঙ্গলবন্দ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে র‌্যাবের হাতে আটক হন তার আরও ৬ সহযোগী। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেফতার হন দলনেতা রিপন। বাকি গ্রেফতাররা হলেন, মো. বিল্লাল হোসেন ওরফে ছোট বিল্লাল (৩৬), নাঈম ইসলাম (২৭), মো. আকাশ (২৬), মো. সুমন (৩০), মো. ফরিদ (৩৮) ও মঞ্জুর হোসেন জিকু (৩৮)। এ সময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যের চোরাইকরা প্রায় ২৬ হাজার ৯৯৫ পিস গার্মেন্ট পণ্যসহ একটি কাভার্ড ভ্যান উদ্ধার করে র‌্যাব। র‌্যাব-৪ একটি দল টানা গত দুই দিন অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গতকাল র‌্যাব-৪ এর কার্যালয়ে অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল মুহাম্মদ আবদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন লাঙ্গলবন্দের ভাইভাই টিম্বার স-মিলের টিনশেড গুদামে অভিযান চালিয়ে গার্মেন্টের চোরাই পণ্যসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের মাধ্যমেই খবর দিয়ে আনা হয় চক্রের হোতা রিপনকে। এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাব-৪ এর সিও বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম এলাকায় এ ধরনের চক্র বেশি সক্রিয়। এমন কর্মকাণ্ডে  কাভার্ডভ্যানের ড্রাইভারও সক্রিয় রয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের গ্রেফতারে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। র‌্যাব সূত্র জানায়, গার্মেন্ট পণ্য বন্দরে যাওয়ার সময় গার্মেন্টের পক্ষ থেকে পণ্যের নমুনা চালকের কাছে দেওয়া হয়। চালকরূপী দুর্বৃত্তরা সুযোগ বুঝে ছবি চক্রের হোতার কাছে পাঠায়। তখন এর বাজার মূল্য বিবেচনায় চুরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পণ্য বন্দরে পৌঁছানোর আগে কাভার্ড ভ্যান থেকে চুরির মাধ্যমে আনলোড করার জন্য তারা ইট ভাটা ও স-মিলসহ পরিত্যক্ত জায়গা বেছে নেয়।

গত দুই বছরে গাজীপুর, আশুলিয়া, আমিনবাজার, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও রাজধানীর মিরপুর এবং ডেমরা এলাকায় ৭টি অভিযান চালিয়ে চোরাই গার্মেন্ট পণ্যের ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি গার্মেন্ট পণ্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাব-৪ এর কয়েকটি দল।

 

যেভাবে গড়ে ওঠে এই চোর চক্র

মো. রিপন ১৯৯০ সালে ঢাকায় এসে সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। পরে ২০০৯ সালে মধ্যপ্রাচ্যে চলে যায়। ২০১৭ সালে দেশে ফিরে এসে রেন্ট এ কার চালক হিসেবে কাজ করার সময় গার্মেন্ট পণ্য চোর চক্রের সঙ্গে পরিচয় হয়। কিছুদিন তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে পরবর্তীতে নিজেই বিল্লাল, নাঈম, আকাশ, সুমন, ফরিদ, মঞ্জুর হোসেন জিকুসহ আন্তঃজেলা চোর চক্র গড়ে তোলে। মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে ঢাকা জজ কোর্টে রিপনের সঙ্গে বিল্লালের পরিচয় হয়। বিল্লালের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকায়। রিপনের কথায় বিল্লাল গোডাউনের বিষয়টি দেখভাল করে শুরু থেকেই। রিপন চুরির আগে নাঈমকে জানালে সব কিছুর সমন্বয় করে। গ্রেফতার ফরিদ প্যাকেজিং করার কাজে অত্যন্ত দক্ষ। মঞ্জুর গোডাউনের মালিক এবং ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি, তার কাছে থাকা গ্যানিং মিশিন দিয়ে কাভার্ড ভ্যানের নাট-বল্টু কাটত। ড্রাইভার আকাশ ও হেলপার সুমন মাঝেমাঝেই কমিশনভিত্তিতে রিপনের ডাকে সাড়া দিয়ে অপারেশনে অংশ নিত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর