বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আমাদের চরিত্র সাংঘর্ষিক

প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আমাদের চরিত্র সাংঘর্ষিক

আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-রবীন্দ্রনাথ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’ ও তাঁর সহধর্মিণী নাফিসা বানুর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শুদ্ধাচার নারীর ক্ষমতায়ন ও অন্যান্য’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আমাদের চরিত্র নিজের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। যখন গুজরাটে দাঙ্গা হয়, মুসলামানরা নির্যাতিত হন, তখন এ দেশের সাম্প্রদায়িক মুসলমানরাও ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলেন। আবার বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটলে তখন আর আমরা ধর্মনিরপেক্ষ থাকি না। তখন আমরা সাম্প্রদায়িক।’ গতকাল আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-রবীন্দ্রনাথ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’ ও তার সহধর্মিণী নাফিসা বানুর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শুদ্ধাচার নারীর ক্ষমতায়ন ও অন্যান্য’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এ বি এম খায়রুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা বেগম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জার্নিম্যান প্রকাশনীর প্রকাশক কবি তারিক সুজাত এবং মাওলা ব্রাদার্সের প্রকাশক আহমেদ মাহমুদুল হক। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা সাম্প্রদায়িক-অসাম্প্রদায়িক এই প্রশ্ন বারবার তুলি। প্রকৃতপক্ষে আমাদের নিজেদের চরিত্রটাই সাংঘর্ষিক। যখন গুজরাটে দাঙ্গা হলো, তখন এ দেশের মুসলমানরা বলতে লাগলেন, গুজরাটে যদি এখন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার থাকত তাহলে অবস্থা এ রকম হতো না। আর আমাদের দেশে যখন কোনো ঘটনা ঘটে তখন সেই অসাম্প্রদায়িক মানুষগুলোই সাম্প্রদায়িক হয়ে যান। তারাই রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে মাতামাতি করেন।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখনো আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানতে চান না। তারা সেই সব লোক, যারা পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করার পরও বাংলাদেশকে স্বীকার করেননি।

তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’ নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের নারীরা অনেক এগিয়ে গেছেন। এক সময় নারীরাই বাংলাদেশের বিচার বিভাগে নেতৃত্বে দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যখন জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা নিই, তখন দেখেছি, পুরুষদের চেয়ে আমাদের নারীরা অনেক বেশি পরিশ্রমী।’ বইয়ের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচারপতি ওবায়দুল হাসান যে বই লিখেছেন, তার প্রতিটা লেখার ভিতর তার অসাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা, মানুষ সম্পর্কে তার অনুভূতি ফুটে উঠেছে। নাফিসা বানুও তার বইয়ে চিন্তা-চেতনা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার এক অনন্য সম্মিলন ঘটিয়েছেন।’

সর্বশেষ খবর