শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

শাবিপ্রবিতে ১৮ শিক্ষার্থী জাবিতে পাঁচ ছাত্রলীগ নেতা কর্মী বহিষ্কার

পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও সংঘর্ষের জের

প্রতিদিন ডেস্ক

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ১৮ শিক্ষার্থী ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে আরও ১২ জন শিক্ষার্থীকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২৭তম সিন্ডিকেট সভায় গ্রহণ করা সিদ্ধান্ত মতে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। যৌন হয়রানির অভিযোগে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের তাসফিকুল হক নামের এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী জীবন চন্দ্র সেনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এদিকে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রতিনিধি জানান, সাভারের এক রেস্টুরেন্টে বসা নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে তৃতীয় দফা মারপিটের ঘটনা ঘটেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দুটি হলের ছাত্রলীগের মধ্যে। গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের মধ্যকার এই মারপিটের ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ হলের এক ছাত্রলীগকর্মী গুরুতর আহত হন। বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসজুড়ে দেশি অস্ত্রের মহড়ায় নামে রবীন্দ্রনাথ হলের ছাত্রলীগকর্মীরা। অবশেষে রাত সাড়ে ১১টায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভা থেকে।

বহিষ্কৃতরা হলেন- আইন ও বিচার বিভাগের ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের কাইয়ূম হাসান ও আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তানভিরুল ইসলাম। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মশাররফ হোসেন হলে থাকেন।

এদের মধ্যে অমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক, গালিব ও কাইয়ূম সহসম্পাদক, আরিফুল ইসলাম কার্যকরী সদস্য এবং তানভিরুল কর্মী বলে পরিচিত। বহিষ্কৃতরা হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। আহত সাইফুলকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সাইফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার পলাশ চন্দ্র দাশ। ভুক্তভোগী সাইফুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

এই মারধরের ঘটনার পাশাপাশি গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দেশি অস্ত্র প্রদর্শন, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটি গত রবিবার (১৯ মার্চ) সাভারের একটি রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের ছাত্রলীগের মধ্যে পাল্টাপাল্টি দুটি মারধরের ঘটনারও তদন্ত করবে।

তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন ১৯ নম্বর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম এবং সদস্য সচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।

শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মারধর এবং সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনায় চিহ্নিত পাঁচজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর