শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে হার্ডলাইনে প্রশাসন

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিরোধ, ভেজাল খাদ্য বিক্রি বন্ধসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে এবার হার্ডলাইনে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। রমজান মাসে যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সেজন্য মাসজুড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাজার পর্যবেক্ষণে জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার অধিদফতর ও সিটি করপোরেশনের আলাদা টিম প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, রমজান শুরুর আগেই সিলেটে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এ বছর যাতে পণ্য মূল্য নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট না হয় সেজন্য আগেভাগেই ‘অ্যাকশনে’ নামে প্রশাসন। এর আগে ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয় কঠোর বার্তা। প্রতিটি দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করে দেয় প্রশাসন। এ ছাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া গরু, খাসি ও মহিষের মাংসের দাম। বৃহস্পতিবার বাজার পর্যবেক্ষণে নামে জেলা প্রশাসনের বিশেষ টিম। নগরীর আম্বরখানা ও শাহি ঈদগাহ এলাকায় চালানো হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিলেটের সহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম মাসুদ। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোবারক হোসেন জানান, রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিরোধ ও বাজার মনিটরিংয়ের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। রমজান মাসজুড়ে এই টিম বাজার মনিটরিং করবে। কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মূল্য আদায় কিংবা ভেজাল পণ্য বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, গত বুধবার থেকে মাঠে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিশেষ টিম। প্রথম দিন তারা সিলেটের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার কালিঘাটে অভিযান চালিয়ে পাঁচ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।

মূল্য তালিকা না টানিয়ে বাড়তি দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করা হয় বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের সিলেট জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক শ্যামল পুরকায়স্থ। রমজান মাসে ভোক্তা অধিকারের এমন অভিযান চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, বাজার নিয়ন্ত্রণে সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সব ব্যবসায়ীকে বাধ্যতামূলকভাবে মূল্যতালিকা টানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ওই সভায় নির্ধারণ করে দেওয়া হয় মাংসের দাম। রমজানে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭২০ টাকা, খাসি ৯৫০ টাকা ও মহিষ ৬০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয় ওই সভায়।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বদরুল ইসলাম জানান, রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সিটি করপোরেশন। কোনো ব্যবসায়ী মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করলে কিংবা অধিক মুনাফায় পণ্য বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশন কোনো ছাড় দেবে না। বাজার মনিটরিংয়ের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একজন নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে টিম করে দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর