মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে চাচাতো ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই চলে আসছিল বিরোধ। স্থানীয় বাজারেও দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দোকান ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছিল দলাদলি। এর জেরে হত্যার শিকার হন শামছুদ্দিন। তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের এ মামলার প্রধান আসামি তাজউদ্দীনসহ (৪৪) পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রবিবার রাতে রাজধানীর মৎস্য ভবন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্যরা হলেন নাসির উদ্দিন (৩৬), রহিম উদ্দিন (৪০), বশির উদ্দিন (৩৮) ও আহবাব হোসেন তানভীর (২৫)। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় : তাজউদ্দীন, নাসির, রহিম ও বশির এ চারজন আপন ভাই এবং তানভীর তাদের ভাতিজা। আর নিহত শামছুদ্দিন তাদের আপন চাচাতো ভাই। তারা সবাই সিলেটে একই গ্রামে পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ ছাড়া স্থানীয় দরবস্ত বাজারের দোকান ও আধিপত্য নিয়ে ছিল দলাদলি। এরই জেরে দুই মাস আগে শামছুদ্দিনের সঙ্গে আমিনুদ্দিন ও তাজউদ্দীনের বাজারের একটি গাছের ডাল কাটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনা কেন্দ্র করে টানা দুই মাস দুই পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা হুমকি-ধমকি চলে। এমনকি একাধিকবার সালিশ বসলেও বিরোধের সমাধান হয়নি। এরপর ২৪ মার্চ রাতে দরবস্ত বাজারের একটি চায়ের দোকানে শামছুদ্দিনের ভাই শামীম এবং গ্রেফতার আসামিদের বড় ভাই কামালের জায়গাজমি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় উভয় পক্ষ তাদের পরিবারের সদস্যদের খবর দিয়ে নিয়ে এলে সেখানে একটি বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদের থামানোর চেষ্টা করেন এবং কিছু সময়ের জন্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে। এরপর ২৪ মার্চ রাতে তাজউদ্দীন, কামাল উদ্দীন, নাসির, রহিম, বশির, তানভীর এবং আরিফ মিলে বাঁশ ও কাঠের লাঠি, কাঠের রুইল, লোহার রড ও দেশি ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমিনুদ্দিন, শামছুদ্দিন ও অন্যদের ওপর হামলা করেন। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে শামছুদ্দিনের মাথার ডান দিকে ও মাথার পেছনে কোপ মারেন তাজউদ্দীন। ফলে শামছুদ্দিন গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এদিকে গ্রেফতার নাসির কাঠের রুইল দিয়ে নিহতের ভাই শামীমের মাথার পেছনে আঘাত করে গুরুতর আহত করেন। আর ধারালো দা দিয়ে নিহতের ভাই ফয়সালের হাতে কোপ মেরে একটি আঙুলে গুরুতর জখম করেন বশির। অন্যদিকে তানভীর লোহার রড দিয়ে নিহতের ভাই মাসুকের পিঠে আঘাত করেন। এভাবে এলোপাতাড়ি মারামারির পর তাজউদ্দীন তার ভাইদের নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরে বাজারের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন আহত শামছুদ্দিনের অবস্থার অবনতি হলে ২৮ মার্চ ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে এক দিন চিকিৎসার পর পুনরায় তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠালে ৩১ মার্চ মারা যান শামছুদ্দিন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর