শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্ষতিকর পলিথিনে সয়লাব বাজার

সুগন্ধি বিক্রির আড়ালে নিষিদ্ধ পলিথিন, পরিবেশ অধিদফতর ও র‌্যাবের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

ক্ষতিকর পলিথিনে সয়লাব বাজার

চার ফুটের ছোট্ট দোকানের মধ্যে থরে থরে সাজানো নানা রকমের সুগন্ধি, ভিনেগার, খাওয়ার সোডা ও কেক তৈরির সরঞ্জাম। তার পাশে একই দোকান মালিকের তালাবদ্ধ নিষিদ্ধ পলিথিনের গোডাউন। সেখানে বস্তাভর্তি সবুজ, নীল, সাদা রঙের শপিং ব্যাগের বিশাল মজুদ। খুলনার হেলাতলা রোড, হকার্স মার্কেট ও খানজাহান আলী মার্কেটে সুগন্ধি বিক্রির আড়ালে এ রকম কয়েকটি গোডাউনের সন্ধান মিলেছে। গতকাল পরিবেশ অধিদফতর ও র‌্যাব-৬-এর অভিযানে হেলাতলা রোডের এসএ পারফিউমারি ও খানজাহান আলী মার্কেটের রনি পারমিউমারির চারটি গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পলিথিন উদ্ধার হয়। এ সময় তাদের মোট ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা ও দোকানের মালামাল বাজেয়াপ্ত করা হয়। জানা যায়, খুলনায় বিভিন্ন স্থানে গোপনে নিষিদ্ধ পলিথিনের কারখানা গড়ে উঠেছে। ঈদকে সামনে রেখে উৎপাদিত এ ধরনের পলিথিন গোডাউনে মজুদ করা হয়। পরে সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হয়। সরেজমিন নগরীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, শেখপাড়া কাঁচাবাজার, জোড়াকল বাজার, খালিশপুর চিত্রালী মার্কেট ও দৌলতপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার আগের তুলনায় ব্যাপকহারে বেড়েছে। মুদি দোকান, কাঁচাবাজার মাছ বাজার শপিং মল সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনের ছড়াছড়ি। পলিথিন পচনশীল না হওয়ায় তা পরিবেশ ও জমি কৃষির ক্ষতি করছে। পাশাপাশি বর্জ্য হিসেবে নালা-নর্দমা, খালবিলে জমা হয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত করছে। বাংলাদেশ পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা, খুলনার সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, চারিদিকে শুধু পলিথিনের স্তূপ দেখা যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক হচ্ছে পাতলা পলিথিন। এ পলিথিন মাটিতে পচে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে খুলনার বড় বাজারে কয়েকটি পাইকারি দোকানে পলিথিন বিক্রি হয়। তবে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। মূল ব্যবসায়ীরা কৌশল পাল্টিয়ে এখন ভ্রাম্যমাণ ছোট আকারের কারখানায় পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। পরিবেশ অধিদফতর খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক মো. আসিফুর রহমান জানান, বিভিন্ন আতর বিক্রির আড়ালে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি হয়। অভিযানে দেখা গেছে, এখানে পলিথিন উৎপাদন করা হয় না। বিভিন্ন স্থান থেকে পলিথিন এনে মজুদ রাখা হয়েছে। আইন অনুসারে যে কোনো ধরনের পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে গোডাউন মালিককে জরিমানা ও দোকানের মালামাল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

র‌্যাব-৬-এর উপ-অধিনায়ক মেজর আবদুর রকিব জানান, অবৈধ পলিথিন বিক্রিতে জড়িতদের মনিটরিং করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও পলিথিন মজুদকারীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর