শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে প্রতিমন্ত্রী

অগ্নিঝুঁকির কথা জানিয়ে নোটিস দেওয়া হয় ১০ বার

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছেন, অগ্নিকান্ডের ঝুঁকির কথা জানিয়ে বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে ১০ বার নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি ২০১৯ সালে মার্কেট খালি করে দেওয়ার নোটিস আমলে না নিয়ে তারা নোটিসের বিরুদ্ধে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা অব্যাহত রাখে। ওদিকে আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার কারণে মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করাও সম্ভব হয়নি। ফলে এই দুঃখজনক ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে গতকাল এসব তথ্য তুলে ধরেন। ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী সংসদকে আরও জানান, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশন বঙ্গবাজার মার্কেটের প্রায় ১.৬৯৭ একর জমি প্রাপ্ত হয়। ১৯৯৫ সালে মার্কেট সমিতি নিজ খরচে তিন তলা বিশিষ্ট বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করে।

 বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট ওই স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়।

 এখানে ১৪১টি গাড়ি পার্কিং ও ৪ হাজার ৪১৩টি দোকান ঘরের সংস্থান রেখে প্রতি ফ্লোরে ৬৭৩৩২.৫৩ বর্গফুট ধরে ১০ তলা ভিত্তি বিশিষ্ট স্টিল স্ট্রাকচার বহুতল ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয় কর্তৃপক্ষ। সর্বনিম্ন দরদাতাকে পাইলিংসহ ফাউন্ডেশন থেকে প্লিন্থ লেভেল পর্যন্ত কার্যাদেশও দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর কর্মকর্তা বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতিকে সংশ্লিষ্ট মার্কেটটি ৩০ দিনের মধ্যে খালি করে দেওয়ার জন্য পত্র দেয়। এ সময় মার্কেট খালি না করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সংশ্লিষ্ট মার্কেট থেকে তিনটি মামলা করা হয়। হাই কোর্ট পত্রের কার্যকারিতা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়, যা বারবার সময় বাড়িয়ে আজ পর্যন্ত বহাল আছে। ফলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে এ মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর ২০১৯ সালের এপ্রিলে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে মার্কেটে সতর্কতামূলক ব্যানার ঝুলিয়ে সতর্ক করে। ২০১৬ সাল থেকে নোটিস প্রদান শুরু হয়। বঙ্গবাজার ব্যবসায়ী সমিতিকে ১০ বার নোটিস দেওয়া হয়। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে ডেকে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ঝুঁকির বিষয়টি পূর্বে অবহিত করা হলেও তারা এই বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ অগ্নিকান্ডের ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং বাংলাদেশ পুলিশ পৃথক পৃথকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও অগ্নিকান্ডের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করেছে। কমিটিগুলোর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে। বিবৃতিতে বঙ্গবাজার অগ্নিকান্ড নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পাশাপাশি সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর