সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

পাহাড় কাটা রুখবে কে

চসিক পাহাড়তলী এলাকার জনগণের প্রশ্ন

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

পাহাড় কাটা রুখবে কে

চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ এলাকার উত্তর পাহাড়তলী মৌজার পাহাড়গুলো দিনের পর দিন কেটে সাবাড় করা হচ্ছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় জনগণ বলাবলি করে ‘পাহাড়খেকো’ কাউন্সিলরকে থামাতে পারে এমন হিম্মত কি কারও আছে! পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমকেই ‘পাহাড়খেকো’ নাম দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। জসিম ২০০৭ সালে ছিলেন একটি বেসরকারি কোম্পানির সুপারভাইজার। তার জীবনে ‘আলাদীনের চেরাগ’ হয়ে আসে স্থানীয় সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড়। পাহাড় কাটার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে তিনি হয়েছেন কাউন্সিলর। বনেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। এ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন অভিযোগে নগরীর বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ‘পাহাড় কাটার অভিযোগে জহুরুল আলমের বিরুদ্ধে একটি মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য মামলার তদন্ত চলছে। এ ছাড়া পাহাড় কাটায় তাঁর স্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে তা উচ্চ আদালত স্থগিত করেছে। বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। আমার এবং স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার যে অভিযোগ করা হচ্ছে তারও সত্যতা নেই।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর আকবর শাহ এলাকার উত্তর পাহাড়তলী মৌজার ১৭৮ নম্বর দাগে তিন পাহাড়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ পাহাড়গুলোর মধ্যে মাত্র ১২ শতক জায়গার মালিক কাউন্সিলর জসিম ও তার স্ত্রী তাসলিমা। এ ১২ শতকের বাহানায় তিনটি পাহাড় দখল করেই কেটে প্লট তৈরি করে বিক্রি করে দিয়েছেন কাউন্সিলর ও তার লোকজন। প্লট বিক্রি ছাড়াও সেখানে তিনি তৈরি করেছেন গরুর খামার। একইভাবে পাশের বেলতলীঘোনা এলাকার তিন একরের একটি পাহাড় কেটে নিজের পিতার নামে প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তৈরি করেছেন প্লট। একই এলাকার ১৭৭ দাগের একটি পাহাড় কেটে তিনি তৈরি করেছেন ব্যক্তিগত কার্যালয় এবং গরুর খামার। এ তিন এলাকায় পাহাড় কাটার অভিযোগে জসিম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে তিন মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদফতর।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জসিম ও তার সিন্ডিকেট পাহাড়তলী এলাকার পাহাড় কেটে কয়েক শ প্লট তৈরি করেছেন। প্লট তিন ও পাঁচ কাঠার। প্রতিটি প্লট তিনি ৭ থেকে ১৫ লাখ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। জসিম পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।  কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর পাহাড় কাটা নতুন মাত্রা পেয়েছে। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তাকে কেউ বাধা না দেওয়ায় বেপরোয়া হয়ে গেছেন। স্ত্রী ও সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে পাহাড় দখল করে দিন রাত কেটে তা বিক্রি করছেন। তার বিরুদ্ধে পাহাড়তলী ও আকবর শাহ এলাকায় পাহাড় কেটে প্লট বিক্রি, কৈবল্যধাম হাউজিং এস্টেটের দেড় শতাধিক দোকান দখল এবং বিশ্বব্যাংক কলোনি এলাকায় কবরস্থানের জায়গা দখলসহ অনেক অভিযোগ আছে।

 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর