মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনা সিটি ভোটে চমক প্রার্থী হচ্ছেন রুনু বিথার

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা সিটি ভোটে চমক প্রার্থী হচ্ছেন রুনু বিথার

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অধ্যাপক রুনু রেজা (রুনু ইকবাল বিথার)। তিনি কেসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর শহীদ ইকবাল বিথারের স্ত্রী ও সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের বোন। গতকাল রুনু ইকবাল বিথার কেসিসির মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৯ বছর আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। খুলনার মানুষের জন্য আমার স্বামীর অবদান সবাই জানে এবং কীভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে এটাও সবাই জানেন। মানুষের সেবা ও মানুষের জন্য উন্নয়ন করা আমার মূল কাজ। নির্বাচিত হলে ভালো কিছুর সঙ্গে থাকতে চাই। ভালো কিছু করতে চাই। এদিকে রুনু বিথার মেয়র প্রার্থী হওয়ার খবর জানাজানি হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়। তারা প্রথমবারের মতো একজন নারী মেয়র প্রার্থী পাওয়ার ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। জানা যায়, রুনু বিথারের স্বামী শহীদ ইকবাল বিথার যুবলীগের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি খুলনায় মাদক নির্মূল ও অবৈধ খাল দখল উচ্ছেদে নেতৃত্ব দিয়েছেন। চারদলীয় জোট শাসনামলে তিনি রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।

২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ও ২০০৯ সালে খুলনা বাণিজ্য মেলায় দরপত্র দাখিলকে কেন্দ্র তার সঙ্গে প্রতিপক্ষের শত্রুতা তৈরি হয়। এর আগে ২০০৭ সালে কেসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এতে তার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেলে প্রতিপক্ষরা ক্ষুব্ধ হন। ২০০৯ সালের ১১ জুলাই রাতে বিথারকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

স্বামীর মৃত্যুর পর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শূন্যপদে উপনির্বাচনে রুনু বিথার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)-এর সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

রুনু বিথার বলেন, ‘তিনি (বিথার) বিরোধী দলে থাকাকালে অসংখ্যবার জেলে গিয়েছেন। আমার বাসায় পিস্তলের হামলা হয়েছে। আমি পিস্তলের সামনে দাঁড়িয়েছি। এরপর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও তার ভূমিকা ছিল এবং আমার স্বামীর সঙ্গে যেটা ঘটেছে সেটা অন্যায় হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি। মানুষ আল্লাহর কাছে যেটা প্রার্থনা করবে আল্লাহ নিশ্চয়ই সেটা কবুল করবেন সে যে কোনোভাবেই হোক।’

রুনু বিথার বলেন, ‘আমি রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন না আবার আমার এখানে আসাটাও (নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া) নতুন কিছু নয়। আমি ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে যে জায়গায় দিয়েছেন আমি সেখানেই নেত্রীর মুখ উজ্জ্বল করেছি। সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সেবা করেছি। আমি রাজনীতির মধ্যে দিয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ও দেশের অগ্রগতিকে পজিটিভ দিকে এগিয়ে নিতে চাই।’

এদিকে কেসিসির মেয়র পদে এর আগে নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। এর বাইরে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন।

বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, এবারে সিটি করপোরেশন নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অ্যাসিড টেস্ট। এই নির্বাচনে বিজয় অর্জন করতে পারলে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনেক সহজ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী বাছাইয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছেন। মনোনয়ন বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই প্রার্থী ঘোষণা করবেন। উল্লেখ্য, ১২ জুন কেসিসি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর