মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

চবি ছাত্রীর আত্মহত্যার দায় স্বামী কাউছারের!

চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী রোকেয়া সুলতানা রুকু (২২) গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করার পেছনে স্বামী কাউছার জড়িত বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। শনিবার চবি শামসুন্নাহার হলের ২১০ নম্বর কক্ষে ৫টার দিকে আত্মহত্যা করেন তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী। জানা গেছে, ২০২২ সালের মে মাসে পরিবারের অগোচরেই দুজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের বাড়ি লালমনিরহাট জেলায়। রোকেয়া সন্তানসম্ভবা হওয়ায় অসুস্থ ছিলেন কিছু দিন। এ সময় চতুর্থ সেমিস্টারের ৩টি পরীক্ষা দিতে পারেননি। সে জন্য ইয়ার ড্রপের হতাশায় আত্মহত্যা করেছেন বলে সন্দেহ করছেন তার স্বামী কাউছার। কাউছার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আত্মহত্যার আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় রোকেয়াকে তার স্বামী কাউছার চবির বঙ্গবন্ধু উদ্যানে চড়-থাপ্পড় দিতে দেখেছেন তার সহপাঠীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু সন্ধ্যা ৭টার দিকে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রোকেয়া ও তার স্বামীকে বসে থাকতে দেখি। এ সময় দেখি তার স্বামী তাকে শাসাচ্ছেন। তিনি বলছিলেন, ‘তুই ঔষধ খাস না কেন? তুই কি আমারে মারবি?’

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী আনোয়ার বলেন, এ সময় কাউছার রোকেয়াকে চড়-থাপ্পড় দিতে দিতে বলছিলেন, ‘বল, তুই কীভাবে মরবি? গলায় দড়ি দিবি, নাকি অন্য কিছু করবি?

স্বামীর এসব বকাঝকার সময় রোকেয়া নিশ্চুপ ছিল। তাকে দেখে হতাশ মনে হয়েছে। পরে আমাদের দেখে তার স্বামী তাকে বলেছিল, ‘চল, ওদিকে চল। এখান থেকে উঠে আয়। ওদিকে চল।’

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, বিষয়টি আমরা তেমন সিরিয়াসলি নিইনি। রোকেয়ার মৃত্যুর পর নিউজে তার স্বামী কাউছারের ছবি দেখে চিনতে পারি। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যারা কথা বলেছিল তারা হলেন রোকেয়া ও তার স্বামী।

রোকেয়ার বড় ভাই আল আমিন বলেন, কাউছারের মানসিক ও শারীরিক টর্চারের কারণে আমার বোন আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন পড়াশোনার কারণে আত্মহত্যা করেনি। সে ২০১৯ সালে উচ্চমাধ্যমিকে ইয়ার ড্রপ করেছিল। সে ইয়ার লসের কারণে আত্মহত্যা করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে রোকেয়ার স্বামী কাউছার বলেন, ‘শনিবার আমি হল গেটে অপেক্ষায় ছিলাম। তাকে মোবাইলে পাচ্ছিলাম না। পরে তার এক বান্ধবী খবর দেয় রোকেয়া আত্মহত্যা করেছে। রোকেয়া আমাকে কিছুই বুঝতে দেয়নি। সে অসুস্থ থাকায় আমি তাকে সঙ্গ দিতে ক্যাম্পাসে চলে যাই। সে সন্তানসম্ভবা আমাকে জানায় গত মাসে। পড়াশোনার ক্ষতি হবে ভেবে সন্তান নিতে চাইনি। সে এমন কাজ করবে এটা আমার কল্পনাতীত ছিল।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুর রহমান বলেন, রোকেয়া মেধাবী শিক্ষার্থী। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাই পরীক্ষা দিতে পারেনি। আমাদের বিষয়টি জানালে আমরা তাকে আশ্বস্ত করি সে যেন চিন্তা না করে। তাকে চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত করতে বলি। আমরা তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলাম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর