বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে পাহাড় কাটায় কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার বেলতলী ঘোনা এলাকায় উন্নয়ন প্রকল্পের নামে পাহাড় কাটায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও দুই নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদফতর। মঙ্গলবার রাতে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাছান আহম্মদ বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল থানা মামলাটি গ্রহণ করে। মামলার আসামিরা হলেন চসিকের রাস্তা নির্মাণ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, চসিকের সিনিয়র উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ওয়ালী আহমেদ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এবি-হক ব্রাদার্সের ওমর ফারুক ও মোসা. তাকিয়া বেগম, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম এবং তার সহযোগী মোহাম্মদ ইসমাইল।

কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম আগেও একাধিকবার পাহাড় কাটার মামলার আসামি হয়েছেন। তিনি চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি। তবে মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হলেও গ্রেফতার হননি।

মামলার এজাহারে বলা হয় : চসিক প্রকল্পের মাধ্যমে এবি-হক ব্রাদার্সকে রাস্তা নির্মাণের অনুমতি দেয় এবং এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ছিল চসিকের প্রকৌশল বিভাগ। গত বছর ২৬ ডিসেম্বর রাস্তা নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে আনুমানিক ১৩ হাজার ৩০০ ঘনফুট পাহাড় কাটার দায়ে চসিক কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে শুনানির নোটিস দেয় পরিবেশ অধিদফতর। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাহাড় কাটা বন্ধ করার জন্য অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড লিখিত অভিযোগ দিলে আবারও শুনানিতে হাজির থাকার নোটিস দেওয়া হয়। ওই সময় কাউন্সিলর জসিম শুনানিতে উপস্থিত থাকলেও চসিকের প্রকল্প পরিচালক এবং সিডিএর কোনো কর্মকর্তা শুনানিতে আসেননি।

পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, প্রকল্প পরিচালনাকালে কোনো টিলা বা পাহাড় কাটা হবে কি না, কী পরিমাণ কাটা হবে, পাহাড় কাটা হলে ভূমিধস রোধকল্পে কোনো গাইডওয়াল কিংবা রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে কি না এ সম্পর্কে কোনো ধরনের তথ্য পরিবেশকে জানানো হয়নি। এ-সংক্রান্ত কোনো অনুমোদনও আসামিরা নেননি। অননুমোদিতভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ করায় বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা ৬(খ) লঙ্ঘন করেছে। তাই সাতজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়েছে।

আকবর শাহ থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, পরিবেশ অধিদফতর মঙ্গলবার রাতে একটি এজাহার জমা দেয়। গতকাল সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, ৭ এপ্রিল বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে পাহাড় কাটার সময় নগরীর আকবর শাহ থানার বেলতলী ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে মজিবুর রহমান খোকা (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন তিনজন। ওই দিন পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে সেখানে খাড়া ও ঝুঁকিপূর্র্ণভাবে ৫০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কর্তন করার সত্যতা তারা পায় এবং কর্তনকৃত অংশে ইটের দেয়ালের নির্মাণকাজ চলতে দেখে।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর